সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও ১৫দিন ব্যাপী ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে আগামী ৫ জুন। চলবে ১৯ জুন শনিবার পর্যন্ত। বুধবার বেলা ১১টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)-এর সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালন করা হবে। সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এবার ৬-১১ মাস বয়সী শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক শিশু ৬৩৭৬ জন, প্রতিবন্ধী ২০ জন শিশু নিয়ে মোট ৬৩৯৬ জন এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক ৫৫০১৩ জন, ৯৩ জন প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে মোট ৫৫১০৬ জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও ভিটামিন ‘এ প্লাস’ ক্যাম্পেইনে সিসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে ১২২টি ইপিআই টিকাকেন্দ্র, ২০টি নিয়মিত কেন্দ্র, ৮২টি অস্থায়ী কেন্দ্র, ২৩টি অতিরিক্ত কেন্দ্রসহ মোট ২৪৭টি কেন্দ্র থাকবে। এগুলোতে ৫৪জন সুপারভাইজার ও ৪৯৪ জন সেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন।
সিসিকের স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ রেনু, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা)’র সাধারণ সম্পাদক আনিস রহমান, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফুল আলম নাসিরসহ ইলেকট্রনিক প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন করোনা মহামারির কারণে প্রতিটি টিকাকেন্দ্রকে উন্মোক্ত স্থানে বসানো হবে। যাতে করে জটলা সৃষ্টি না হয়। তিনি শিশুদের অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কেন্দ্রে আসার আহবান জানান।
ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-এর প্রচারণার বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলদের অবগত করার পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে চিটি পাঠানো এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে অবগত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন ডা. জাহিদ।
সভাশেষে সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়া’র মত রোগ হতে পারে যাতে করে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ও ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় ও ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।
তিনি জন্মের পর পরই নবজাতক শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানো, প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ সবুজ শাখ সবজি ও হলুদ ফল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন ‘এ’ সৃমদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকার আহবান জানান।
ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফলতায় গণমাধ্যমের প্রসংশা করে তিনি বলেন, আপনাদের কারণেই প্রতি বছর এই ক্যাম্পেন সফলতার সাথে সম্পন্ন হয়। এবারও আপনাদের লিখনীতে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি টিকানিতে উৎসাহিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এসএসডিসি/বিএম