বৃহস্পতিবার দুপুরে কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত তামিম মিয়া ঐ উপজেলার গোবরিয়া-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর ভাটিপাড়া গ্রামের মো. মাইন উদ্দিনের ছেলে।
তামিম মিয়া গত শনিবার মাকে জানান, রমজান মাসে সে ঢাকায় জুতার কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করবে। ঈদের সময় টাকা আয় করে বাড়ি ফিরবে। এ জন্য তার নগদ ২৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। ছেলের এমন কাজে যাওয়ার আগ্রহ দেখে খুশি হয়ে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করে ২০ হাজার টাকা এনে দেন মা।
এদিকে পাঁচদিন আগে তামিম ঢাকায় জুতার কারখানায় কাজ করবে বলে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর ঐ রাতে তার বাড়িতে একটি নম্বর থেকে কল আসে। বলা হয় তামিমকে অপহরণ করা হয়েছে। মোবাইলের ওপাশ থেকে একটি মেয়ে কণ্ঠ জানায়- যদি ছেলেকে জীবিত চান, তবে এক লাখ টাকা নিয়ে দ্রুত চলে আসেন।
টাকা না দিলে তামিমকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এ অবস্থায় ছেলেকে বাঁচাতে মা প্রতিবেশীদের কাছে টাকা চেয়ে ব্যর্থ হন। শেষে প্রতিবেশীদের পরামর্শে কুলিয়ারচর থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান। এরপর বুধবার কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তামিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঐ সময় মা জানতে পারেন, প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরাফেরা ও রেস্টুরেন্টে খাওয়ার জন্য নিজেই নিজের অপহরণের নাটক সাজিয়েছিল তামিম।
তামিমের মা আফিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী বেঁচে নেই। আমাকেই সংসার চালাতে হয়। তামিমের একমাত্র বোন প্রতিবন্ধী। তামিম পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বর্তমানে বেকার। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছ থেকে টাকা নিত। মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা সংসারে খরচ করি। বিভিন্ন সময় ছেলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন আমার তিন বেলার খাবার জোগাড় করতেই কষ্ট হয়।
কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রেমিকার সঙ্গে ঘোরাফেরা ও রেস্টুরেন্টে খাওয়ার খরচ জোগাতে আটককৃত তরুণ অপহরণ নাটক করেছিল। ভুক্তভোগী মায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তামিমের অবস্থান চিহ্নিত করে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় সে প্রকৃত ঘটনা খুলে বলে। পরে কাউন্সেলিং করে তাকে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।