এরই মধ্যে সব অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মূল পর্বও শেষ-শুধু ইউরোপিয়ান প্লে-অফ ও আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের ম্যাচগুলো বাকি। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার আবার একটা প্রীতি ম্যাচও খেলার কথা জুনে। এর মধ্যে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের এই ম্যাচটা হবে কি হবে না, হলে কবে-কোথায়-কীভাবে হবে, কত প্রশ্ন ছিল। এর মধ্যে আর্জেন্টিনা জানিয়ে দিল, তারা ব্রাজিলের সঙ্গে ম্যাচটি খেলতে চায় না।
কিন্তু ফিফা গতকাল আবার আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এএফএ) নির্দেশ দিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে ম্যাচটি খেলতেই হবে। যদিও এর আগে ম্যাচটি ব্রাজিলেই হবে জানালেও নতুন করে এএফএ-র মহাসচিব ভিক্তর ব্লাঙ্কোকে পাঠানো চিঠিতে ফিফা জানিয়েছে, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ম্যাচটা হবে, তবে কোথায় হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ইংল্যান্ডে খেলা আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড় ইংল্যান্ড থেকে ব্রাজিলে ঢোকার পথে করোনাবিষয়ক বিধিনিষেধ মানেননি, এই অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে ম্যাচে ঢুকে পড়েন আনভিসার কর্মকর্তারা। সে সময়ে করোনা পরিস্থিতি আরও বেশি জটিল ছিল, ইংল্যান্ড ব্রাজিল থেকে কারও তাদের দেশে ঢোকায় কড়াকড়ি আরোপ করার পর ব্রাজিলও পাল্টা দিয়েছে, ইংল্যান্ড থেকে যাওয়া কারও তাদের দেশে ঢোকার ক্ষেত্রে নিয়ম কড়া বানিয়ে দেয়। সেই নিয়মই আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড় ভেঙেছেন বলে অভিযোগ ছিল আনভিসার।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি মাঠে গড়ালেও ৭ মিনিটেই আনভিসার কর্মকর্তারা মাঠে ঢোকায় ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থগিত করা হয়। প্রথমে ফিফার ভাবনা ছিল, যেহেতু ব্রাজিলের মাটিতে হতে যাওয়া ম্যাচটিই পন্ড হয়েছে, তাই ব্রাজিলেই হবে এবারের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে যখন ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল, তখন তো ম্যাচটি কোথায় হচ্ছে, এখানে কে জিতল কে হারল সেটির গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল। এখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বই শেষ, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ভাগ্যও এই ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে না, সে কারণেই কি না, ব্রাজিলের বদলে অন্য কোথাও ম্যাচটা নিয়ে যাওয়ার ভাবনাও শোনা যাচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি বা দুবাইয়ে অথবা বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারে ম্যাচটি হতে পারে বলে গুঞ্জনের কথা লিখেছে আর্জেন্টাইন দৈনিক টিওয়াইসি স্পোর্ত। আরেকটি বিকল্প হতে পারে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে ১১ জুন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচের টিকিটও বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু ঝামেলাটা হলো, আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের সঙ্গে এভাবে পরপর দুটি ম্যাচ খেলতে চাইছে না।
প্রীতি ম্যাচও তো চাইলেই বাদ দিয়ে দেওয়া যায় না। ফিফার অনুমতি নিয়েই ম্যাচটি আয়োজিত হচ্ছে, সেখানে বিজ্ঞাপন-সম্প্রচারক সংস্থাসহ কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে। সেই ম্যাচ বাতিল করতে যাওয়া মানে আইনি ঝামেলা ডেকে আনা।
এদিকে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সূচি শেষ করতে বাছাইপর্বের এই ম্যাচটিও আয়োজন করতে চায়। ২২ সেপ্টেম্বরে ম্যাচ হওয়া মানে বিশ্বকাপের তখন আর মাস দুয়েকও বাকি থাকবে না। বিশ্বকাপের আগে ছয় মাসের মধ্যে নেইমারদের বিপক্ষে দুবার খেলতে চায় না মেসির আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার যুক্তি, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেই তারা দক্ষিণ আমেরিকান সব দলের বিপক্ষে দুবার করে খেলেছে, বিশ্বকাপের আগে এই পাঁচ-ছয় মাসে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার পথে মূলত ইউরোপের দলের বিপক্ষেই খেলতে চায় আর্জেন্টিনা। এরই মধ্যে অনেক ম্যাচের ব্যাপারে কথা এগিয়েও গেছে।