৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৩:২৯

বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

সোনার সিলেট ডেস্ক
  • আপডেট বুধবার, আগস্ট ১৬, ২০২৩,

বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও নানাভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেনাপোলে যোগদানের পর থেকেই ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ এসেছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগে বলা হয়েছে, শুল্ক গোয়েন্দার ডিসির কাজ হচ্ছে বড় ধরনের শুল্ক ফাঁকি ধরা। কিন্তু আরেফীন জাহেদী অধিকাংশ পণ্যের চালান লক করে রাখেন। কাস্টমস কর্মকর্তারা একটি পণ্যের চালানের পরীক্ষণ শতভাগ সম্পন্ন করার পর ডিসি আরেফীন ঐ পণ্যের চালান লক করে দেন। পরে একই পণ্যের চালান শুল্ক গোয়েন্দারা ফের শতভাগ পরীক্ষণ করেন ৪/৫ দিন ধরে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রেই পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব জমা দিয়ে তাদের পণ্য চালান খালাশ করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারেন না। পরীক্ষণের সময় প্রতিটি প্যাকেজ কেটে ছিড়ে পরীক্ষা করা হয়। ফলে কাঁটাছেড়া প্যাকেজের পণ্য ক্রেতারা কিনতে চান না। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের আর্থিক লোকসান হচ্ছে বলেও জানা গেছে। শুল্ক গোয়েন্দারা কোনো পণ্য চালান দেখতে চাইলে তারা কাস্টমসের সাথে যৌথভাবে পরীক্ষণ করলে একই প্যাকেজ বারবার কাঁটাছেড়া করার দরকার হয় না। ৩/৪ দিনেই একটি চালানের পরীক্ষণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।

শুল্ক গোয়েন্দাদের এ ধরনের হয়রানির কারণে অধিকাংশ আমদানিকারকরা এই বন্দর ছেড়ে এখন একই পণ্য কোনোধরনের ঝুঁকি ছাড়াই সীমান্ত পথে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসছে। ফলে সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে।

গত ৫ জুলাই ভারত থেকে আমদানি করা দু’টি মাছের চালান আটকে ৮ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে রাতের আধারে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবহিত না করেই গোপনে ডিসি আরেফীন জাহেদী চালান ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ৩ দিন পর কাস্টমসের একজন যুগ্ম কমিশনার মাছের ফাইলগুলোতে শুল্ক গোয়েন্দা ডিসি আরেফীনের বিরুদ্ধে ৩ পৃষ্ঠার একটি নোট লেখেন। যে সব পণ্য চালান শুল্ক গোয়েন্দা পরীক্ষণ করেন, সেসবের প্রতিটি চালান থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।

বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, শুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন জাহেদীর যোগদানের পর ব্যবসায়ীদের হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি প্রায়শই পণ্য চালান লক করে কাস্টমসকে অবহিত না করে ৪/৫ দিন ধরে শতভাগ পরীক্ষণের নামে হয়রানি করেন। সেই সাথে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না।

শার্শা উপজেলা দুর্নীতি দমন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেটো বলেন, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করেন, তার বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা জরুরি ভিত্তিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।

বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনি কে, সব বিষয়ে আপনার সাথে কথা বলতে হবে? তিনি আরও বলেন, আমরা যথা নিয়মে কাজ করছি। ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিসে আসেন, কথা হবে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিম বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা যে দু’টি মাছের চালান আটক করে আবার ছেড়ে দিয়েছেন সে বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়নি। ফাইল আমাদের কাছে আসলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ফকরুল ইসলাম বলেন, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আপনারা কাগজে লেখেন। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo