২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৬:৪৪

গভীর রাতে মারধর করে আবাসিক ছাত্রকে হলছাড়া করল ছাত্রলীগ

সোনার সিলেট ডেস্ক
  • আপডেট বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৩,

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের কক্ষ থেকে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে গভীর রাতে বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁকে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সৈকত রায়। তিনি ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ওই হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এ ঘটনায় সৈকত রায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গতকাল রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম ওরফে সীমান্তের ১২ থেকে ১৫ জন অনুসারী কক্ষে এসে এক আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং মারধর শুরু করেন। সৈকত বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে প্রাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে কল দেওয়ার জন্য তিনি হলের চতুর্থ তলা থেকে তৃতীয় তলায় নামলে আজিজুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়।

অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, আজিজুল ইসলাম জোর করে সৈকতের মুঠোফোন কেড়ে নেন এবং তাঁকে ৪২০ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর বিছানাপত্র কক্ষ থেকে বের করে নিচতলার হলগেটে নামিয়ে দেন এবং গালিগালাজ করে তাঁকে হল থেকে বের করে দেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর মুঠোফোনে ফ্লাশ দিয়ে জরুরি ফাইল ডিলিট করে দেওয়ার পাশাপাশি ৩ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেন।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে সৈকত রায়কে হেনস্তার পাশাপাশি হুমকি দিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছিলেন বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ওই সময়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সৈকত লিখেছেন, বিষয়টি গত ৬ এপ্রিল তিনি লিখিতভাবে প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর এবং ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালককে জানিয়েছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় হলে আসন ফিরে পান তিনি।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সৈকত রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ৪ জন হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে ছিলাম। এর মধ্যে একজন বাড়িতে ছিলেন এবং আরেকজন রিডিং রুমে পড়াশোনায় ছিলেন। তখন কক্ষে আমি ও মেহেদী হাসান ছিলাম। মূলত মেহেদী হাসানকে মারধর করতেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসেছিল। আমি বাধা দিলে আমার সঙ্গেও তারা ঝামেলা করে। এখনো আমি হলের বাইরে আছি।’

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম ওরফে সীমান্ত ছাত্রলীগের ইংরেজি বিভাগ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত রাতে তিনি হলের ওই কক্ষে যাননি এবং কক্ষ থেকে কোনো ছাত্রকে বের করে দেওয়ার কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই।

এ বিষয়ে সৈকত রায়ের অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরফিন খান। তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo