পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাজা স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তোশাখানা মামললায় তার সাজা স্থগিত করে। এর আগে গত ৫ আগস্ট দুপুরে ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হুমায়ুন দিলাওয়ার এ মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ রুপি অর্থদণ্ড দেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুখ ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহান-গিরির নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। এর আগে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে করেন পাকিস্থানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের এ রায় তার জন্য বড় বিজয় হিসেবে এসেছে। তিনি তোশাখানা মামলায় নিজের দোষী সাব্যস্ততা এবং সাজাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
আদালত জানিয়েছেন, সাজা স্থগিতের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
প্রধান বিচারপতি ফারুখ বলেন, রায়ের বিস্তারিত খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। আমরা এখন বলছি যে সাজা বাতিলের আবেদন অনুমোদন করা হলো।
পিটিআই চেয়াম্যানের আইনবিষয়ক উপদেষ্টা নাইম হায়দারও এক এক্স (সাবেক টুইট) বার্তায় বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি আমাদের আবেদন গ্রহণ করেছেন। তিনি সাজা বাতিল করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
তিনি আরও জানান, আদালত কেবল তার রায় স্থগিত করেছেন। তবে কখন ইমরান খান অ্যাটক কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এর আগে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টে নতুন পদ সৃষ্টি করে ওএসডি হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক। খবর জিও নিউজের।
গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (এডিএসজে) হুমায়ুন দিলাওয়ার। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
পিটিআইপ্রধানের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার পর পর বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে অন্য যে কোনো জায়গায় বদলি করার আবেদন করেন। বিশেষ করে জুডিশিয়াল কমপ্লেক্স জি-১১ ভবনে অবস্থিত বিশেষ আদালত বা ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) বদলির আবেদন করেন তিনি।
এদিকে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের সাজা স্থগিতের ওপর গতকাল শুনানি করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ফারুক ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহান-গিরির সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের আইএইচসি বেঞ্চ।
শুনানির শুরুতে আইএইচসির প্রধান বিচারপতি বলেন, সাজা স্থগিতের আবেদন এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। বিচারিক আদালত যা করেছে, তা আমরাও করতে পারি। তবে আমরা তা করব না।
রায়ের ব্যাপারে বিচারিক আদালত ভুল করেছে উল্লেখ করে বিচারপতি ফারুক বলেন, ‘আমরা সোমবার পর্যন্ত মামলার শুনানি স্থগিত করছি। কেউ না এলেও আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করব।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট পৃথক আরেক শুনানিতে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বন্দিয়াল বলেছিলেন, তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের বিরেুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে রায় দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।