২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ দুপুর ১:২৫

জকিগঞ্জে হুছামুদ্দীন চৌধুরীর সমর্থনে ছাত্রলীগের গণসংযোগ!

জকিগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট রবিবার, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩,

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদকে রেখে আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেবের কনিষ্ঠপুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরীর কেটলি মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীর কেটলি মার্কায় ভোট চেয়ে প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে ভোটের মাঠে নতুন মেরুকরণ তৈরি হয়েছে।

জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ (নৌকা প্রতীক)। তাঁর বিপক্ষে রয়েছেন আওয়ামীলীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবীর (ট্রাক প্রতীক), বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী (কেটলি প্রতীক), জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান  শাব্বির আহমদ (লাঙল প্রতীক), তৃণমূল বিএনপি থেকে ব্যারিস্টার কুতুব উদ্দিন শিকদার (সোনালী আঁশ), কংগ্রেস থেকে বদরুল আলম (ডাব প্রতীক), মুসলিম লীগ প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম (হাত পাঞ্জা প্রতীক)। কিন্তু দলীয় প্রার্থী থাকার পরও হঠাৎ করে নৌকার কর্মীরা ইউটার্ন নিয়েছেন। তাঁরা নৌকা ছেড়ে প্রকাশ্যে মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীর কেটলি মার্কায় ভোট চাইতে শুরু করেছেন। কেউবা আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবিরের পক্ষে ভোট চাইছেন।

সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও কাজলসার ইউপির চেয়ারম্যান আশরাফুল আম্বিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুলতান আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জকিগঞ্জ শহরে মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীর কেটলি মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেছেন। শনিবারও বিকেলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুলতান আহমদ নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরে মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে তারা কেটলী মার্কাকে বিজয়ী করার আহবান জানান। অন্যদিকে, শনিবার জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল আহাদ শহরে প্রকাশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবিরের ট্রাক মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেছেন।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একই ঘরানার তিন প্রার্থী ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে তোলায় আওয়ামী ভোট ব্যাংক ভাগাভাগি হতে পারে। ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে কেটলি মার্কার প্রচারণা শুরু করায় হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে চলে আসতে পারেন। অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। কিন্তু এবারের নির্বাচনে দলের একটি অংশের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রতীক নৌকা ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবির এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীর সঙ্গে প্রকাশ্যে কাজ করায় নৌকা বিজয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগে ঐক্য গড়ে উঠলে নৌকা বিজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী হঠাৎ করেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দিনরাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভোটের মাঠে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তাঁর অনুসারী নেতাকর্মীরা মনে করেন তফসিলের পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী সাক্ষাৎ ‘একটি শুভ বার্তা’।  এরআগে বির্তকিত পাঠ্যপুস্তক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক করে সফল হয়েছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও কাজলসার ইউপির চেয়ারম্যান আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, দলীয়ভাবে কোনো বাধা না থাকায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীকে বিজয়ী করতে কাজ করছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন। তার দায় শোধ করতে তারা চান তাঁকে বিজয়ী করতে চান।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo