১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৮:২২

২৭ বছর পর আবারও মন্ত্রীত্ব শূন্য সিলেট-১

সোনার সিলেট ডটকম
  • আপডেট শুক্রবার, জানুয়ারি ১২, ২০২৪,

স্বাধীন বাংলাদেশে সিলেট-১ আসনে যে দলের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন সে দলই সরকার গঠন করত। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।  তবে ব্যতিক্রম হয়েছে মর্যাদাকর এ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি অন্যান্যবারের ন্যায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রী হতে পারেননি। স্বাধীনতার পর থেকে বিগত সরকারের আমল পর্যন্ত সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত ভিআইপি এমপিগণ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে আসছিলেন। বলা যায়, এটা এক ধরনের রেওয়াজ বা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। এবার সেই রেওয়াজে ঘটেছে ব্যাঘাত। তবে এটা একেবারে নতুন ঘটনা নয়। আগে ১৯৯১ সালের বিএনপি সরকারে সিলেট-১ আসন থেকে বিজয়ী সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভায় না রাখার নজির রেখেছিল।

সিলেট-১ আসন থেকে  যারা নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়েছেন বরাবরই তারা প্রত্যেকেই হেভিওয়েট রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। ফলে এই আসন থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সবসময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের এবারের নতুন মন্ত্রীসভায় রাখা হয়নি সিলেট ১ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে আব্দুল মোমেনকে। শেখ হাসিনা সরকারের শেষ মন্ত্রীসভায় আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

গত ২৭ বছরের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি যেই দল ই সরকার গঠন করুক সেখানে অবধারিতভাবে এই আসনে বিজয়ী এমপিকে মন্ত্রীসভায় রাখা হয়েছিল। আব্দুল মোমেনের আগে ১৯৯১ সালের বিএনপি সরকারে সিলেট-১ আসন থেকে বিজয়ী সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভায় না রাখার নজির রেখেছিল।

১৯৯১ সালে সিলেট থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছিলেন খন্দকার আব্দুল মালিক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী। ১৪ জুলাই ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে বিজয়ী হুমায়ূন রশীদকে আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সফল স্পিকার ধরা হয় হুমায়ূন রশীদকে।

২০০১ সালে বিএনপি থেকে এই আসনে এমপি হয়ে সংসদে আসেন সাইফুর রহমান। বিএনপি ও জোট সরকারের মন্ত্রীসভায় অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম সফল এই অর্থমন্ত্রী। সাইফুর রহমান বিএনপির ৯১ সরকারেরও টেকনোক্র্যাট অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

২০০৮ ও ১৪ সালে এই আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান। সাইফুর রহমান, আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শাহ এম এস কিবরীয়ার কারণে দেশের রাজনীতিতে সিলেট মানেই অর্থমন্ত্রী এমন একটা ধারণা জন্মে গিয়েছিল।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আবুল মাল স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে তার ভাই আব্দুল মোমেনকে প্রার্থী করেন। প্রথম নির্বাচনে জয়ী মোমেনকে শেখ হাসিনা সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেন। কিন্তু মোমেন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা বিতর্কের জন্ম দেন। বিভিন্ন সময় ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক’, কিংবা দিল্লিতে গিয়ে বলে এসেছি, ‘হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে’-এ জাতীয় অসংলগ্ন কথা বলে বিরাগভাজন হয়ে এবার নতুন মন্ত্রীসভা থেকেই বাদ পড়লেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo