ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে সিলেট জেলার তিনটিসহ বিভাগের নয় উপজেলায় নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছেন। পুরাতন মুখ একটিতে বিজীয় হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত সিলেটের
তিনটি, সুনামগঞ্জের ৪টি, হবিগঞ্জের ২টি ও মৌলভীবাজারের একটি উপজেলায় এই নির্বাচন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন বর্জন করলেও বিএনপির নেতারা এ নির্বাচনের অংশগ্রহণ করে জয়ী ও পরাজিত হয়েছেন। যদিও দল তাদেরকে বহিষ্কার করেছে নির্বাচনের অংশগ্রহণ করার জন্য।
সিলেটের গোয়াইনঘাট ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দুই নেতা বিজয়ী হয়েছেন। সুনামগঞ্জের তিনটিতে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতাদের ভরাডুবি হয়েছে। অবশ্য কোথাও কোথাও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়ত, আল ইসলাহ নেতারা বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হলেও অনিয়ম ও জাল ভোট ঠেকাতে কঠোর ছিল প্রশাসন। জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় অনিয়মকারীদের মোবাইল কোর্টের সম্মুখীন করে অর্থদণ্ড আদায় করা হয়। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। তবে বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল:
কোম্পানীগঞ্জ
সিলেটের ৩ উপজেলায় নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছেন। সাবেকদের হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিন রাজনীতিক। এর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন। তিনি আনারস প্রতীকে ২৮ হাজার ২৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম আহমদ মোটরসাইকেল প্রতীকে ২২ হাজার ২১৩ ভোট ও আবুল মনসুর মো. রশিদ আহমদ ঘোড়া প্রতীকে ১০ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. লাল মিয়া। তিনি চশমা প্রতীকে ২৯ হাজার ১২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন মাইক প্রতীকে ১৮ হাজার ৭৫ ভোট, সাংবাদিক আবিদুর রহমান উড়োজাহাজ প্রতীকে ৬ হাজার ৭৯ ভোট, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হেলাল টিউবওয়েল প্রতীকে ৫ হাজার ৩৫৯ ভোট ও মো. ইকবাল হোসেন তালা প্রতীকে ১ হাজার ৭৩০ ভোট পেয়েছেন।
আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আয়শা বেগম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি কলস প্রতীকে ২৭ হাজার ৮৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী নাসরিন জাহান হাঁস প্রতীকে ১২ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন সহ মোট ১২ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। উপজেলায় ৪০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। বিচ্ছিন্ন দু একটি ঘটনা ছাড়া কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এ উপজেলায় মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৪২ জন।
গোয়াইনঘাট:
এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শাহ আলম স্বপন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৪৫ হাজার ৯৯টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৬ হাজার ৮৬৭ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জমিয়ত নেতা গোলাম আম্বিয়া কয়েস চশমা প্রতীক নিয়ে ৩০ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রমিক নেতা কুতুব উদ্দিন টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৭০০ ভোট। অপর প্রার্থী যুবলীগ নেতা ফারুক আহমেদ তালাপ্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১২ হাজার ৮শ ৯৬ ভোট ও সংবাদ কর্মী ইসলাম আলী মাইক প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯ হাজার ৯শ৬৪ ভোট।
সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খোদেজা রহিম কলি পদ্মফুল প্রতীক নিয়ে ২৫ হাজার ৪শ ৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মরিয়ম বেগম কলস প্রতীক নিয়ে পান ২৩ হাজার ১শ ২৫ ভোট। অপর প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আফিয়া বেগম ফুটবল প্রতীক নিয়ে ২১ হাজার ৬শ ৩ ভোট পান।
এ উপজেলায় ৮৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। উপজেলায় মোট ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৪১ জন।
জৈন্তাপুর:
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী (আনারস) প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৩৭ হাজার ৯শ ৬ ভোট। তার নিকটম প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল গফফার চৌধুরী খসরু (কাপ-পিরিচ) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৪ হাজার ১০ ভোট।
অপর প্রার্থী ব্যবসায়ী এম ইসমাইল আলী আশিক (দোয়াত কলম) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৮৭ ভোট। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে ব্যালট পেপারে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ এর নাম থাকলেও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবুও তিনি (ঘোড়া প্রতীক) নিয়ে পেয়েছেন ১৮৪ ভোট। অপর প্রার্থী আলহাজ্ব হোসেইন আহমদ (মোটর সাইকেল) প্রতীক থাকলেও তিনিও নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি পেয়েছেন ১০৫ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহাদ উদ্দিন সাদ্দাম (টিউবওয়েল) প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ২৩ হাজার ৮শ ৮৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাওলানা কবির আহমদ (চশমা) প্রতীক নিয়ে পান ১৫ হাজার ১শ ৪২ ভোট।
অপর প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন (মাইক) ৫ হাজার ৩শ ১৮ ভোট, , নজরুল ইসলাম (উড়োজাহাজ) ২ হাজার ৪শ ১৭ ভোট, আব্দুল খালিক (টিয়া পাখি)১ হাজার ১শ ৭৪ ভোট, আব্দুল হক (বৈদ্যুতিক বাল্ব) ২ হাজার ১ ভোট, মাসুক উদ্দিন (তালা) ২হাজার ৪শ ৬৯ ভোট ও শংকর দাশ (বই) প্রতীক নিয়ে পান ৯ হাজার ৯শ ৬ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান সংরক্ষিত পদে মোছা: সুনারা বেগম (কলস) প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ২৭ হাজার ৮শ ৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মরহুম ফয়েজ আহমদ বাবর’র সহধর্মিণী মোছা: পারভীন আক্তার (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে পান ১৫ হাজার ৭শ ৪২ ভোট। বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান পলিনা রহমান (সেলাই মেশিন) নিয়ে ৪ হাজার ৭শ ৮০ ভোট ও সাবেক ভাইস- চেয়ারম্যান জয়মতি রানী (প্রজাপতি) প্রতীক নিয়ে পান ১৩ হাজার ১শ ১৯ ভোট। জৈন্তাপুর উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ছিল ৪৬ ছিল। মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ জন।
গতকাল ভোটগ্রহণ চলাকালে বিচ্ছিন্নভাবে দু একটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা ঘটে। অনিয়মের অভিযোগে ১০ জন ভোটারকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। এর বাইরে কোথাও বড় ধরনের কিছু ঘটেনি।
সুনামগঞ্জের ৪টি উপজেলায় বিজয়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতাদের। সবকটা উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তাহিরপুর
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করেছেন যুবলীগ নেতা ও বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন। নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ১৬ হাজার ভোট বেশি পেয়ে চমক দেখিয়েছেন এই নেতা। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৫১৫ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি আবুল হোসেন পেয়েছেন ২০ হাজার ১৩ ভোট। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি (বহিস্কৃত) আবুল কাসেম। এছাড়াও এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলমগীর খোকন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আইরীন আক্তার বিজয়ী হয়েছেন।
বিশ্বম্ভপুর উপজেলা
নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পষিদের চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
নিকটতম প্রার্থীর চেয়ে মাত্র ১৩৯০ টি ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ১৯২ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলীপ কুমার বর্মন ঘোড়া প্রতীকে ১৪ হাজার ৮০২ ভোট পেয়ে তৃতীয় বারের মতো পরাজিত হয়েছেন।
এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে হেলিকাপ্টার প্রতীকে পরাজিত হয়েছেন বিএনপির উপজেলা সাবেক সভাপতি (বহিষ্কৃত) মো. হারুন অর রশীদ। এছাড়াও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাহ মো. দিলাওয়ার হোসেন দিলু এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জান্নাত মরিয়ম বিজয়ী হয়েছেন।
জামালগঞ্জ
দ্বিতীয়বার প্রার্থী হয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম । নিকটতম প্রার্থীর চেয়ে ১৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
মোটরসাইকেল প্রতীকে রেজাউল করিম শামীম পেয়েছেন পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯০৩ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা বিএনপির (সদ্য বহিষ্কৃত) সভাপতি নূরুল হক আফিন্দি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৪৫ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ১৩ হাজার ৫৬০ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ।
এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে আকবর হোসেন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মারজানা ইসলাম শিবনা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
ধর্মপাশা
সুনামগঞ্জের সীমান্তিক উপজেলা ধর্মপাশায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ। তিনি ঘোড়া প্রতীকে ১৮ হাজার ৪৯৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা নাসরিন সুলতানা দিপা আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৭২ ভোট। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এ এইচ ওয়াসিম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অনামিকা আক্তার বিজয়ী হয়েছেন।
চার উপজেলায় ১৮৩ কেন্দ্রে ৫ লাখ ২৩ হাজার ভোটের বিপরীতে ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজনগর
জেলার সদর ও রাজনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন গতকাল মঙ্গলবার হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের নির্দেশনায় ২দিন আগে সদর উপজেলার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। অবশ্য যথারীতি রাজনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাজাহান খান দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৮শ’ ১৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের আওয়ামী লীগ নেতা রওনক আহমেদ অপু ১৯ হাজার ৫শ ৯৮ ভোট পেয়েছেন।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল কাদির ফৌজি ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন সুমাইয়া সুমি।
বাহুবল
বাহুবলে ৫ আওয়ামী লীগ নেতাকে হারিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাভেল্স ব্যবসায়ী এক আলেম। বিজয়ী প্রার্থী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৮ হাজার ৬৮২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৮৪ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাফেজ কামরুল ইসলাম ১৮ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফারুক মিয়া পেয়েছেন ১১ হাজার ২৫ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুন নাহার রিতা ১৫ হাজার ১৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাসিনা আক্তার সিফা পেয়েছেন ১৩ হাজার ৯৫৬ ভোট।
বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাজন চৌধুরী ১২ হাজার ৮৯ ভোট, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাদির চৌধুরী ৭ হাজার ৩৭৩ ভোট, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আক্তারুজ্জামান ৫ হাজার ৮৪ ভোট, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ আলী মিয়া ৪৭৩ ভোট এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান ২৬৯ ভোট।
ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অন্যান্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট- মোঃ নবী হোসেন মোড়ল ৮ হাজার ৭৭১ ভোট, মোঃ শামীনুর রহমান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট, মোঃ সোহেল আহমেদ ৩ হাজার ৯১০ ভোট, শশাংক রঞ্জন দাশ ৩ হাজার ৫১৮ ভোট, সিরাজুল ইসলাম ৩ হাজার ১৯৩ ভোট এবং মোহাম্মদ আব্দুল মালেক মাদানী ২ হাজার ১৯৯ ভোট।
ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অন্য প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট- সালেহা বেগম চৌধুরী ১১ হাজার ৪৫৫ ভোট, মোছাঃ আলফা বেগম ৮ হাজার ২০১ ভোট এবং মোছাঃ নিসফা আক্তার ৬ হাজার ৬৭৯ ভোট।
নবীগঞ্জ : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মুজিবুর রহমান চৌধুরী শেফু চিংড়ি প্রতীকে জয়ী হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পান ২৭ হাজার ৯৯১টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ৭০১ ভোট। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপম দাস অনুপ এ ফলাফল ঘোষণা করেন।