বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশব্যাপী (ঢাকা বিভাগ ব্যাতিত) এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেন শুরু হতে যাচ্ছে। মহিলাদের জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য এই টিকাদান ক্যাম্পেইনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।২৮ দিন এ ক্যাম্পেইন চালু থাকবে।
বুধবার দুপুরে নগরীর এক অভিজাত হোটেলের মিলনায়তনে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য জানানো হয়।সভায় বলা হয়,পৃথিবীর ১৩০টি দেশ ইতোমধ্যে এই টিকা কার্যকর করেছে। এটি নিরাপদ ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত। এটি বেলজিয়ামে উদ্ভাবিত হয়। সভায় বলা হয় জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হবে ও মারা যাবে বলে গবেষকদের ধারণা।
প্রেস কনফারেন্সে বলা হয়, বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে ক্যান্সার আক্রান্তের দিক থেকে জরায়ু মুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতি ১ লক্ষ নারীর ১১ জন জরায়ু মুখ ক্যান্সারের আক্রান্ত হন এবং প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন মহিলা মৃত্যু বরণ করেন। জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে।
দেশ ব্যাপী ২৪ অক্টোবর হতে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২৮ দিন (১৮ কর্মদিবস) এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে। এই টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্রী (৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী) এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির কিশোরী (১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরী)-কে টিকাদানের আওতায় আনা হবে। প্রথম ২ সপ্তাহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর হতে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তীতে দুই সপ্তাহ কমিউনিটিতে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। স্থায়ী কেন্দ্রে প্রথম ১০ কর্মদিবস শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাদ পড়া ছাত্রীদের টিকা প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী ০৮ কর্মদিবস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং কমিউনিটির বাদ পরা কিশোরীদের টিকা প্রদান করতে হবে। ক্যাম্পেইনের এইচপিভি টিকাদান সেশন শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ০৩.৩০টা পর্যন্ত চলবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ডা: মো: আনিসুর রহমান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম, ইউনিসেফ সিলেটের প্রধান আফরোজা ইসলাম,সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নোবেল, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার আহমদ, সাংবাদিক দেবব্রত রায় দীপন প্রমুখ।এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির,বাসস’র সিলেট ব্যুরো প্রধান সেলিম আউয়াল,সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান আতা,সাবেক কোষাধ্যক্ষ কাউসার চৌধুরী,সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মুহিত দিদার, সাধারণ সম্পাদক এম সাইফুর রহমান তালুকদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহমদ রনি,ইমজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলজার আহমদ সহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
সভায় জানানো হয়, এই ক্যাম্পেইনকে সামনে রেখে দেশের অন্যান্য জেলার মত সিলেট জেলায়ও জেলা পর্যায় থেকে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত টিকাদানের সাথে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত জেলা সমন্বয় কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দ সহ শিক্ষক, ধর্মীয় প্রতিনিধি ও অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে অবহিতকরণ ও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হযেছে।
বুধবার সকালে সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সিলেট জেলার প্রায় ষাটটি দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দের উপস্থিতিতে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী সভা অনুষ্ঠিত হয়।ক্যাম্পেইনকে সাফল্যমন্ডিত করতে সিলেট জেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ সিলেট জেলার সর্বস্তরের জনগনের সর্বাত্নক সহযোগীতা কামনা করা হয়।