২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:১৩

রিভিউ না নিয়ে সাদমানকে হারাল বাংলাদেশ

খেলাধুলা ডেক্স
  • আপডেট বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১,

ক্রিজ ছেড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেছিলেন সাদমান ইসলাম। কী কথা হয়েছে, তাঁরা দুজনই জানেন। তবে সেই আলোচনার সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশের জন্য আফসোসই বয়ে আনল। মুশফিক-সাদমান মিলে রিভিউ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু পরে রিপ্লেতে দেখা গেল, রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন সাদমান। অপরাজিত থেকে যেতেন।

ইনিংসজুড়ে দারুণ খেলা সাদমান চা-বিরতির ১০ বল আগে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন জোমেল ওয়ারিকানের বলে। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিনারের ফুল লেংথ বলটা মিডল স্টাম্প বরাবর পড়েছিল। বাঁহাতি সাদমান সুইপ করতে চেয়েও পারেননি, বল লাগে তাঁর প্যাডে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের আবেদনে আম্পায়ারের আঙুল উঠে যায়। ৫৯ রানে আউট হয়ে যান সাদমান।

অথচ পরে রিপ্লেতে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্পের বাইরেই চলে যেত। এই আফসোস নিয়েই চা বিরতিতে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। চা বিরতির আগে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৪০। ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম (৯*) ও সাকিব আল হাসান (৩*)।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের আক্ষেপ ছিল নাজমুল হোসেনের রানআউট। সাদমানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে নাজমুল রানআউট হওয়াতেই প্রথম সেশনটা হেলে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে। দ্বিতীয় সেশনে এবার বাংলাদেশের আফসোস সাদমানের আউটে রিভিউ না নেওয়া।

দুই সেশনেই খেলা হয়েছে ২৯ ওভার করে। দুই সেশনেই বাংলাদেশের ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ রান তুলেছে ৬৯, দ্বিতীয় সেশনে ৭১। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বস্তি দিতে পারেনি।

অথচ সাদমান ও অধিনায়ক মুমিনুল হক মিলে দ্বিতীয় সেশনে কী দারুণ ব্যাটিং-ই না করছিলেন! দুজনই বাঁহাতি। উচ্চতাও কাছাকাছি। দুজনের খেলার ধরনেও অনেক মিল। দেখেশুনে ধীরে-সুস্থে প্রতিটি বল বুঝে খেলার চেষ্টা থাকে তাঁদের। প্রথাগত টেস্ট ব্যাটসম্যান যাকে বলে!

জুটিতে ৫২ রান এসেছে ১৫৫ বলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বলতে গেলে তেমন সুযোগই দেননি দুই ব্যাটসম্যান। জুটিতে প্রথম ১০ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারেননি দুই ব্যাটসম্যান, দেখেশুনে খেলেছেন। প্রথম ২০ ওভারেই জুটিতে বাউন্ডারি ১টি – ৩৪তম ওভারে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে পয়েন্টে কাট করে যেটি মেরেছেন মুমিনুল।

মূলত সিঙ্গেলের ওপর ভিত্তি করে খেললেও বাজে বলে মারতেও ছাড়েননি মুমিনুল-সাদমান। ৪৪তম ওভারেই যেমন, কাইল মেয়ার্সের চার বলের মধ্যে দুটি চার মেরেছেন দুই ব্যাটসম্যান। ওভারের প্রথম বলে শর্ট বলে পুল করে চার সাদমানের, তিন বল পর প্যাডের ওপরে এসে পড়া ফুল লেংথ বলকে ডিপ স্কয়ার লেগ বাউন্ডারির সীমানার বাইরে পাঠিয়েছেন মুমিনুল। সেই চারেই বাংলাদেশের ইনিংসে শতরান পূর্ণ হয়েছে। মুমিনুল অবশ্য ৪৭তম ওভারের চতুর্থ বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটি ধরার মতো কেউ ছিলেন না। এরপর ওয়ারিকানকে দারুণ ড্রাইভে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ হয়েছে সাদমানের। বাঁহাতি ওপেনারের ৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটি, আগের ফিফটিটিও ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই।

প্রথম সেশনে ২ উইকেটে ৬৯ রান করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে এ দুজনের ব্যাটে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৫০ রান তুলে ফেলেছিল।

তখন মনে হচ্ছিল, এ দুজনের ব্যাটেই বড় ভিত্তি আসছে, যেটির ওপর ভিত্তি করে ‘ইমারত’ গড়ার কাজ করতে পারবেন মুশফিক-সাকিবরা। কিন্তু চা বিরতির ঠিক আগে ৩৩ বলের মধ্যে একে একে আউট মুমিনুল ও সাদমান দুজনই। সাকিব ও মুশফিককে তৃতীয় সেশনে আবার জুটি গড়ায় মনোযোগ দিতে হবে।

৫১তম ওভারের পঞ্চম বলে ওয়ারিকানকে লেগ সাইডে মারতে গিয়েই শর্ট মিড-উইকেটে ধরা পড়লেন মুমিনুল। এরপর সাদমানকে ঘিরে ওই আক্ষেপ। ৫৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লু হয়ে গেলেন ওয়ারিকানের বলেই!

এর আগে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের হয়ে ৯ রান করে আউট হয়ে গেছেন তামিম ইকবাল। এই ৯ রানে মুশফিকুর রহিমকে পেরিয়ে কিছুক্ষণের জন্য বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান হয়ে যায় তামিমের, যদিও মুশফিক নেমেই আবার শীর্ষে উঠে গেছেন। এরপর সাদমানের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুলের ৪৩ রানের জুটিতে বড় কিছুর স্বপ্ন ভেঙে যায় দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে।

এসএসডিসি/বিএম 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo