২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৬:৪৬

আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রাজনগর

সোনার সিলেট ডেস্ক
  • আপডেট শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১,

আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মৌলভীবাজারের রাজনগর গতকাল রণক্ষেত্রে রুপ নেয়। এ সময় পুলিশ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খানসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ অন্তত ১০৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

এ সময় দুটি সিএনজি ও একটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহতদের রাজনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক ও র‌্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আওয়ামীলীগের জনসভা আহ্বান করা হয়েছে। এই জনসভা সফলের লক্ষ্যে আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদের সামনে জড়ো হয়। অপরদিকে গত মঙ্গলবার রাজনগরে ওই জনসভাকে সফলের লক্ষ্যে আওয়ামীলীগের করা একটি মিছিল শেষে সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিপক্ষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিষোদাগার করা হয় দাবি করে এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল করতে রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খানের কার্যালয়ে তার অনুসারীরা জড়ো হয়। হঠাৎ করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। এসময় ২টি সিএনজি অটোরিক্সা ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উভয় পক্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ ১০৩ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ও ৪ রাউন্ড টিয়ার শেল ছোঁড়ে। উভয়পক্ষের ছোঁড়া ইটপাটকেল ও রাবার বুলেটে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খান (৪৫), মামুন আহমদ (২০), শরিফ মিয়া (২৫), ইয়ামিন আহমদ (৩৩), রমজান মিয়া (৩৩), রিয়াদ আহমদ (২৩), তারেক মিয়া (২৫), জালাল আহমদ (৩২), লিকন মিয়া (২৮), সেজু আহমদ (২৮), ইউসুফ আহমেদ (২৬), ফাহিম আহমদ (২৪), সাইম মিয়া (২০), রাজন মিয়া (২৫), পার্থ দাস (৪০), পরকিছ মিয়া ( ৬০), রিপন মিয়া (২২), রিয়াদ মিয়া (২২), তারেক আহমদ, পুলিশের এসআই এরশাদ, কন্সটেবল পবিত্র ও সুব্রতসহ অন্তত ৩০ জন।

রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখত্ বলেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আওয়ামীলীগের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। এসময় বিএনপি-জামায়াতের সহায়তায় উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের উপর হামলা চালান। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলার সময় দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও তাদেরকে সহায়তা করেছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখতের নেতৃত্বে মিছিল করে। এসময় আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে তারা। বিষয়টি জেনে আমার শুভাকাঙ্খিরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার সময় মিছিল আয়োজন করেছিল। এসময় মিলন বখতের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার সরকারি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এতে তারেক নামে আমার একজন কর্মী ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ফাঁকা রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুঁড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। কারো পক্ষ নেয়নি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo