৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৯:৩৯

খুদেবার্তায় আত্মহত্যার হুমকি শিক্ষকের

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট মঙ্গলবার, এপ্রিল ৫, ২০২২,

পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ভদ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক সহকারী শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে আত্মহত্যা করবেন জানিয়ে খুদেবার্তা পাঠিয়েছেন।

কারণ হিসেবে লিখেছেন- প্রায় ৫ বছর আগে জাহাঙ্গীর বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই স্কুল কমিটির সদস্য জাহিদুল ও প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। তাকে হেনস্তার চূড়ান্ত অবস্থায় নিয়ে গেছেন ওই দুইজন।

এই খুদেবার্তাটি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় পৌর মেয়রের কাছেও পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরকে ডেকে এ বিষয়ে কথা বলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে জাহাঙ্গীর আলম ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ভদ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হতে থাকে। বিভিন্ন সময় এ বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যরা সমাধানের চেষ্টাও করলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

সম্প্রতি সদস্য জাহিদুল নিয়মিত তাকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাতে থাকেন। এ অবস্থায় জাহাঙ্গীর উপায় না পেয়ে গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি সমাধান না করলে আত্মহত্যা করবেন বলে খুদেবার্তা পাঠান।

আতঙ্কিত জাহাঙ্গীর বিদ্যালয়ে ছাত্রদের পাঠদান করালেও বেশ কিছুদিন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষেও প্রবেশ করেন না। পাঠদান না থাকলে তিনি মাঠে চেয়ার পেতে বসে থাকেন।

তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে মাঠে চেয়ার পেতে বসা ছবি দিয়ে লিখেছেন- ‘এই তো আছি বেশ ভালোই যাচ্ছে দিনগুলো! ক্লাশ টাইম শ্রেণিতে আর বাকি সময় এখানে বসেই কাটে। অফিস কক্ষে বসা…..’।

এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান ও শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জাহাঙ্গীর আলমকে ডেকে তার কথা শোনেন এবং বিষয়টি নিরসনের আশ্বাস দেন।

ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে যুগান্তর প্রতিনিধি প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে গেলে সেখানে কাকতালীয়ভাবে উপস্থিত হন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম।

প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীরের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। তার সঙ্গে আমার কিংবা সদস্য জাহিদুলের কোনো বিরোধ নেই। তিনি ছাত্রদের ঠিকভাবে পড়াশোনা করান না; এতে বিভিন্ন অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দিতে চেয়েছেন কিন্তু আমি তাকে ভালোবাসি বালে তাদের লিখিত অভিযোগ নেইনি।

একই কথা বলেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম। তিনি আরও যোগ করেন, জাহাঙ্গীর ঠিকভাবে ছাত্রদের পড়ান না। ছাত্রদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। এ কাজগুলো করতে নিষেধে করায় তিনি এমন অভিযোগ তুলেছেন।

তবে বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র ও ছাত্রীকে শিক্ষক জাহাঙ্গীর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা তাকে ভালো শিক্ষক হিসেবেই জানিয়েছেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম আমাকে মারধর করার জন্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিদ্যালয়ে ঘোরাফেরা ও করে ভয়ভীতি দেখায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আত্মহত্যার হুমকির মেসেজ পাওয়ার পরপরই ওই শিক্ষককে ডেকে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টির সমাধান করার জন্য তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এছাড়া বদলি প্রক্রিয়া চালু হলেই তাকে অন্যত্র বদলি করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo