১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৮:১৩

পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৩০ মার্চ

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩,

আর মাত্র বাকি একটি স্লিপার। মাত্র ৭ মিটারের স্লিপারটি সফলভাবে বসে গেলে শতভাগ সম্পন্ন হবে পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপনের কাজ। তবে এই অংশটুকু ঢালাই করা হয়নি একটি স্লিপারের অভাবে। সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের একটি স্টিলের স্লিপার নিয়ে নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

এদিকে, আগামী ৩০ মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে পরীক্ষামূলক ভাবে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলবে রেল। যেখানে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এরইমধ্যে পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার সকালে প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, স্লিপারটির ছিদ্র ডিজাইন অনুযায়ী মিলছে না। সূক্ষ্ম এই রেল লাইন নিখুঁতভাবে নির্মাণ একেবারে শেষ পর্যায়ে। কিন্তু শেষ মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি যথাযথ না হওয়ায় বিলম্ব করতে হচ্ছে।

তবে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে এই স্লিপারটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছে বলে জানান এই প্রকৌশলী। তিনি আশা প্রকাশ করেন, খুব শীঘ্রই এটি এসে পৌঁছাবে।

৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেল সেতুতে মোট ৮টি এমন মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। এর ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন হয়েছে সফলভাবে। বাকি জয়েন্টও স্থাপন হয়েছে তবে রেল লাইন ঢালাই করার জন্য ও শতভাগ কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই স্লিপারে বিকল্প নেই।

প্রকৌশলীরা জানান, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিপারগুলো ছাড়া বাকি কংক্রিটের সব স্লিপার চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরনো রেল স্টেশনের পাশে স্লিপার ফ্যাক্টরি স্থাপন করে সেখানেই তৈরি করেছে এই স্লিপার। শুধু সেতুর স্লিপারই নয় পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেল লাইন তৈরি জন্য সব স্লিপার তৈরি করেছে এখানে। তবে বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।

রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচ তলায় সূক্ষ্মভাবে টেকসই পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এটি এখন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ বিগ্রেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আবার সেই সেতুতে রেল সংযোগ করা আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যে কোনো জিনিস তৈরির সময় যেটা টেবিলে করা হয়, সেটা যখন বাস্তবে অবগ্রাউন্ডে করা হয় তখন সেটা সে রকমভাবে হয়ে ওঠে না। সেটার জন্য আমাদের প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। যেটা আমরা সংশোধন করেছি। এখানে আমরা সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি। কংক্রিট আনার আগে, প্রেসিং করার সময়, পরে আমরা প্রতিটা বিষয় টেস্ট করছি, তারপর সেটা ব্যবহার করছি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেল রুটটিও। প্রস্তাবিত রুটটি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারি-মিয়ানমারের গুনদুম সীমান্তে গিয়ে মিশবে। তাই পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচলে নতুন এক অধ্যায় রচনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo