মাটি ও মানুষের কবি মোশাররফ হোসেন খানের ৬৬তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৫৭ সালের ২৪ আগস্ট একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান-যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার অন্তর্গত কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত বাঁকড়া গ্রামে। বাবা ডা: এম এ ওয়াজেদ খান এবং মা বেগম কুলসুম ওয়াজেদ।
কবি মোশাররফ হোসেন খান ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য পত্রিকা মাসিক ‘নতুন কলম’ ও মাসিক ‘নতুন কিশোরকণ্ঠ’-এর সম্পাদক। তিনি সুস্থধারার সাহিত্য সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে অক্লান্তভাবে পরিভ্রমণ করেন। তিনি দেশের লক্ষ নবীন-তরুণ লেখকের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন লেখক তৈরির কারিগর।
বাংলা কবিতাকে আমাদের বিশ্বাস, আদর্শ, ঐতিহ্য এবং মৌল চেতনার সাথে আধুনিকতাকে সম্পৃক্ত করে তিনি আধুনিক কবিতার বাঁক পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। এ জন্য তাকে একজন প্রতিভাবান মৌলিক আধুনিক কবি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শিশুসাহিত্যেও রয়েছে তার ব্যাপক অবদান। সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় কবি খানের দৃপ্ত পদচারণায় আমাদের সাহিত্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। তার কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে মানুষ, মানবতা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, আদর্শ, স্বপ্ন এবং মহাজাগতিক রহস্য। দেশ ও আন্তর্জাতিক বীক্ষণও তার কবিতার একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ। কবি খানের বহু কবিতা এবং ছোটগল্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং হচ্ছে।
কবিতা, গল্প, ছড়া, উপন্যাস, কিশোরতোষসহ এ পর্যন্ত তার প্রায় শতকের কাছাকাছি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মুসলিম অবদান’সহ তিনি সম্পাদনা করেছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ও সঙ্কলন।
তার বিখ্যাত ও বহুল পঠিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘হৃদয় দিয়ে আগুন’, ‘নেচে ওঠা সমুদ্র’, ‘বিরল বাতাসের টানে’, ‘পাথরে পারদ জ্বলে’, ‘সবুজ পৃথিবীর কম্পন’, ‘দাহন বেলায়’, ‘স্বপ্নের সানুদেশ’, ‘পিতার পাঠশালা’, ‘কবিতাসমগ্র-১’, কবিতা সমগ্র-২, কুহক ও কুহকী, বুকের ভেতর দহন দুপুর, শিখর শিলালিপি প্রভৃতি। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে কবিকে নিয়ে হেলাল আনওয়ারের একক গ্রš- ‘কবি মোশাররফ হোসেন খান : কবিতার কালপুরুষ’। গ্রন্থটি ইতোমধ্যেই সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি এ পর্যন্ত বহু পুরস্কার, পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।