১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল ১০:০৩

১২ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার: আলাদা হলো লাবিবা-লামিসা

সোনার সিলেট ডটকম
  • আপডেট মঙ্গলবার, মার্চ ২২, ২০২২,

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের পর আলাদা হলো জোড়া লাগানো শিশু লাবিবা ও লামিসা। দুজনেরই জ্ঞান ফিরেছে। তাদেরকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপাড়া গ্রামের মো. লাল মিয়া ও মোছা. মনুফা বেগম দম্পতির সন্তান তারা।

সোমবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিট থেকে শুরু করে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। পরে সংবাদ সম্মেলনে শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল বলেন, আমরা নিউরো সার্জারি বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ, রেডিওলোজি বিভাগ, ইউরোলোজি বিভাগ, অর্থোপেডিকস বিভাগ, সার্জারি ও এনেসথেসিয়া বিভাগের প্রায় ৩৮ জন চিকিৎসক মিলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের দুজনকে আলাদা করেছি। তাদের দুজনকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, তাদের যোনীদ্বারের মূত্রনালী ও পায়ুপথ খুবই কাছাকাছি। সে জন্য আলাদা করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ছিল।

আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ, তাদের দুজনেরই মেরুদণ্ডের নিচের অংশ জোড়া লাগানো ছিল। সেজন্য ক্ষত স্থানে কোনো আঘাত লাগলে প্যারালাইজড হওয়ার ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাদের দুজনকে আলাদা করা হয়। আলাদা করার পরই তারা পা নাড়িয়েছে। এরপর তাদের দুজনকে দুটি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে আটটার মধ্যেই তাদের অপারেশনের কাজ সমাপ্ত করা হয়।

তিনি জানান, মঙ্গলবার (২২ মার্চ) তাদের দুজনকে খেতে দেয়া হবে। তাদের দুজনের জন্য প্রথম ৪৮ ঘণ্টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অপারেশনের এই ধকল সামলাতে তাদের কিছুটা সময় লাগবে। লামিসার মাসিকের রাস্তায় পরবর্তী ৩ থেকে ৬ মাস পর ছোট্ট একটি অপারেশন লাগবে। একটি মজার বিষয় হলো- লাবিবার প্রথম জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফিরেই বলে ওঠে ও কোথায়। আমরা বুঝতে পেরেছি তার বোনকে খুঁজছে। লামিসার জ্ঞান কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে বলেও জানান তিনি।

অ্যানেসথেসিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোছলেমা বেগম জানান, দুই শিশুর ওজন ছিল ১৬ কেজি। তাদের শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখা ও জ্ঞান ফিরিয়ে আনাই ছিল আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আল্লাহর রহমতে সবকিছু ঠিকমতো হয়েছে। আমাদের টিমও খুব স্ট্রং ছিল। অপারেশনের পর প্রথমে লাবিবার জ্ঞান ফিরে। এর কিছুক্ষণ পর লামিসার জ্ঞান ফিরেছে। তারা দু’জনই ভালো আছে।

নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে এলাহী মিল্লাত জানান, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া শিশু দু’টিকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছি। স্পাইনাল কডে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। পঙ্গু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশরাফুল আলম জানান, আমরা ঢাকা মেডিকেলকে মানুষের আস্থার জায়গা বানাতে কাজ করছি। এরকম সফল অস্ত্রোপচার আমাদের আরও এগিয়ে নেবে। আজ জোড়া শিশু আলাদা করতে সক্ষম হয়েছি। এতে চিকিৎসকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তেমনি নার্স, ওয়ার্ড বয়, আয়ারা ও অন্যান্য কর্মচারী সবাই পরিশ্রম করেছেন।

এসএসডিসি/ ইবিএস/ ২২-০৩-২২/ ১০:৪৫

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo