২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ১:১৭

সুনামগঞ্জে বাড়ছে পানি, হাওরে বাড়ছে ঝুঁকি

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সোমবার, এপ্রিল ৪, ২০২২,

হাওর এলাকার নদনদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফসল রক্ষা বাঁধের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। দ্রুত বেগে যাদুকাটা, সুরমা, বৌলাই, কুশিয়ারা, রক্তি, মনাই, সুমেশ্বরী, কালনী নদীর পানি বাড়ছে। সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত কম হলেও সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়েই চলেছে। ফলে শনি মাটিয়ান, হালির হাওর, সোনামোড়ল, শালদীঘা বোয়ালিয়াসহ অনেক হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের গোড়ায় পানি চলে এসেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারগুলোতে পানির চাপ ক্রমশ বাড়ছে। পানি বাড়ার সংগে সংগে বাঁধে দেয়া হচ্ছে মাটিভর্তি বস্তা বাঁশ। প্রায় প্রতিটি হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে স্থানীয় কৃষকরা স্বেচ্ছায় বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন। রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলার শনি হাওর, মাটিয়ান হাওর, হালির হাওর এলাকা ঘুরে এমনচিত্র দেখা যায়। তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের লাকমা গ্রামের মংগল মিয়া বলেন, সারা দিন মেঘ বাদলি হয়নি অথচ নদীর পানি ফুলে ফেঁপে ওঠছে। পানি কমার কোন লক্ষণ নেই। কাউকান্দি গ্রামের কুদরত মিয়া বলেন, সীমান্তের সবকটি পাহাড়ি ছড়া দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি নামছে। পাহাড়ে ভারী বর্ষণ হয়েছে। ছড়ার সব পানি নদীতে এসে পড়ছে। গেল সপ্তাহে নদীর পানি খুব কম ছিলো। কিন্তু গত কয়েক দিনে নদনদীর পানি এক লাফে বেড়ে গেছে। লেদারবন গ্রামের হাছেন আলী বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের গোড়ায় পানি এসে পড়েছে এবার অথচ গেল বার পানির কোন খবর ছিল না। কৃষকরা এতো পানি দেখে আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। জয়পুর গ্রামের খলিল মিয়া বলেন, নদনদীর পানি না কমলে বাঁধ টিকিয়ে রাখা দায় হবে। জমির ধান এখনো সবুজ রং ধারন করে আছে।
মধ্যনগর উপজেলার দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। কখন কি হয় বলা যায় না। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে বাঁধে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা করতে হলে ব্যাপকভাবে নদী খনন করতে হবে। হাওরের চারপাশে প্রবাহিত নদীগুলো নাব্যতা ও পানি ধারন ক্ষমতা নেই। তাই ঢলের পানিতে নদীর দুই কুল উপচে যায়। জরুরি ভাবে নদীগুলো খনন করা দরকার।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জহরুল ইসলাম বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই পানি বিভিন্ন নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানি চাপ বেড়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পানি কারণে নদীর পানি বাড়ছে। প্রতিটি বাঁধেই সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসন এলাকাবাসী সবাই বাঁধে কাজ করছেন। আজ পর্যন্ত টাংগুয়ার হাওর এর নজরখালী বাঁধ ছাড়া কোন বাঁধ ভাংগেনি। যে বাঁধে যে রকম সমস্যা হচ্ছে সেখানে তেমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ফসল রক্ষাবাঁধ রক্ষা করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে আর ১০ দিন পরে হাওরে ধান কাটা শুরু হবে। বাঁধের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাশ, বস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলতি বছর ১২০ কোটি টাকা ব্যয় করে ৫৩০ কিলোমিটার ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এবছর ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo