তবে পেঁয়াজ, সজনের ডাটা, সোনালি মুরগির দাম কমলেও রোজার প্রভাবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন ও শসা। বেগুনের কেজি ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আর শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এর সঙ্গে ইলিশ ও রুই মাছের দাম বেড়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কালশী, মিরপুর-১, ৬, ১৩, কচুক্ষেত বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ২৫ টাকা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৩০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মাঝে হুট করে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। সেসময় পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা বিক্রি করেছি। পেঁয়াজ বাজারে আসার পর থেকে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আড়ত থেকে কম দামে কিনতে পারায় কম দামে বিক্রি করছি।
কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, বাজারে এখন পেঁয়াজের সংকট নেই। পেঁয়াজের আমদানিও অনেক। এ কারণে দাম কমেছে। এখন এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) পেঁয়াজ একশ টাকা বিক্রি করছি। পেঁয়াজের দাম হয়তো আর কমবে না। তবে এ দাম আরো কিছুদিন থাকবে।
পেঁয়াজ কিনতে আসা রুবাইত ইসলাম বলেন, ২০০ টাকা দিয়ে দুই পাল্লা পেঁয়াজ কিনেছি। অর্থাৎ ২০ টাকা কেজি পড়েছে। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা কিনেছিলাম। এ প্রথম রোজায় পেঁয়াজের দাম কমতে দেখছি। পেঁয়াজের দাম কমায় ভালো লাগছে।
কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজার প্রভাবে গত সপ্তাহ ধরেই বেগুনের কেজি ১০০ টাকা। গত এক সপ্তাহে বেগুনের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। ব্যবসায়ীরা প্রকারভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। বেগুনের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। এক কেজি শসা কিনতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজিও।
পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে, ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, কিছুদিন আগে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া সজনে ডাটার দাম কমে ৮০ টাকায় নেমেছে। সামনে এ সবজির দাম আরো কমবে।
মিরপুর-১৩ নম্বর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, দুই সপ্তাহ আগে সজনে ডাটার কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন সজনে ডাটা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। কয়েকদিনের মধ্যে দাম আরো কমে ৫০ টাকা হতে পারে।
অন্যদিকে মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাতদিনের ব্যবধানে বেড়েছে রুই ও ইলিশ মাছের দাম। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এক সপ্তাহে আগে রুই মাছের কেজি ছিল ২৬০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। কিছুদিন আগে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায়। অন্যান্য মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছের দামের বিষয়ে কালশী বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোজার প্রভাবে ইলিশ ও রুই মাছের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার কারণেই দুটি মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া সোনালী মুরগির দাম আগের তুলনায় কমেছে।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের মতো ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩১০ থেকে ৩৪০ টাকা। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম গত সপ্তাহের মতো ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতো ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে মহল্লার গলির কিছু ব্যবসায়ী গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দামে পরিবর্তন হয়নি।