কবি আসাদ চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। কানাডার টরন্টোর স্থানীয় একটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
কবির মেয়ের জামাতা ফ্রিল্যান্স চিত্রগ্রাহক নাদিম ইকবাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, মৃত্যু হায়নাদের মতো তার (আসাদ চৌধুরী) পিঁছু লেগেছিল অনেকদিন ধরেই। কিন্তু তিনি ছিলেন সিংহরাজ। সহজে হার মানেননি, তার নামের অর্থও তাই।
শেষ বাক্যে তিনি লিখেন, সবার টানটান উত্তেজনা আর শুভ প্রত্যাশার অগুনিত তারগুলো ছিঁড়ে গেছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে সপরিবারে টরন্টোতে বসবাস করছেন কবি আসাদ চৌধুরী। বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ নানান জটিল রোগে ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরে তাকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একুশে পদকপ্রাপ্ত আসাদ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি। কবিতায় প্রতিবাদের ঝড় তোলেন তিনি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন সবসময়। আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গী, টেলিভিশনে জনপ্রিয় সব অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্য তিনি বেশ পরিচিত। এছাড়া তিনি তার ভরাট কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি করেও মানুষের মন জয় করেছেন।
মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ও অনুবাদকর্মে তার অবদান প্রণিধানযোগ্য। ১৯৮৩ সালে তার রচিত ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এছাড়া ওই বছর তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক গ্রন্থ ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’ সম্পাদনা করেন। ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন আসাদ চৌধুরী।
১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। তার মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। পিতার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী ওরফে ধনু মিয়া।