১লা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ১০:৪১

বিশ্বনাথের মেয়রের উপর নারী কাউন্সিলরের মা ম লা

সোনার সিলেট ডটকম
  • আপডেট বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪,

‘মারধর, শ্লীলতাহানী ও মেয়রের নির্দেশে গাড়ি দিয়ে প্রাণে হত্যা’র চেষ্টার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান’কে প্রধান অভিযুক্ত করে বুধবার (২৪ এপ্রিল) থানায় মামলা দায়ের করেছেন পৌরসভার ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম। মামলা নং ৫ (তাং ২৪.০৪.২৪ইং)।
গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে হামলার শিকার হন পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম।

৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে থানায় দায়ের করা মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজর আলী, ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বারাম উদ্দিন, পৌর এলাকার শিমুলতলা গ্রামের আত্তর আলীর পুত্র সুরমান আলী (মেয়রের এপিএস), দক্ষিণ মিরেরচর গ্রামের মৃত রুস্তুম আলীর পুত্র মিতাব আলী, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের পুত্র তবারক আলীর আনোয়ার আলী, রামপাশা ইউনিয়নের রহমাননগর গ্রামের শমসের আলীর পুত্র হেলাল মিয়া (মেয়রের গাড়ির ড্রাইভার), পৌর এলাকার জানাইয়া (মশুলা) গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার পুত্র আব্দুস শহিদ।
এদিকে পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতেই পৌর এলাকায় সর্বস্তরের নাগরিকের ব্যানারে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। নারী কাউন্সিলরের উপর হামলা, ঝাড়ু মিছিল ও মেয়রের উপর মামলা দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বনাথে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে মামলার বাদী পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম উল্লেখ করেছেন, পৌরসভার ১০ কাউন্সিলরদের মধ্যে আমরা ৭ জন একত্রিত হয়ে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের ‘দূর্নীতি ও অপকর্ম’র বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে অনাস্থা প্রস্তাব দেই। উক্ত বিষয় নিয়ে পৌর মেয়র’সহ অভিযুক্তরা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং ক্ষিপ্ততার অংশ হিসেবে সামাজিক যোগযোগ যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে পৌর মেয়র মুহিব’সহ অভিযুক্তরা বেআইনীভাবে ‘দক্ষিণ মিরেরচর কমিউনিটি ক্লিনিক’র সামনে মিলিত হয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও স্থানীয় লোকজনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মানহানীকর কথাবার্তা এবং নারী কাউন্সিলরদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করাকালে বাদী (রাসনা) ও স্থানীয় লোকজন তাকে (মেয়র) বাঁধা নিষেধ করেন। এনিয়ে মেয়র’সহ অভিযুক্তদের সাথে স্থানীয় কাউন্সিলর ও এলাকার স্থানীয় লোকজনের তর্কাতর্কি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান বাদী নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমের চুল ধরে টানাহেচড়া করে শ্লীলতাহানী করে মারধর করেন। এসময় অন্যান্য অভিযুক্তরাও নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমকে মারধর ও শ্লীলতাহানী করেন। একপর্যায়ে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের নির্দেশে তার (মেয়র) গাড়ির চালক হেলাল মিয়া মেয়রের গাড়ি দিয়ে বাদী নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসায় বাদী নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের সাথে তার ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে এব্যাপারে আরেক অভিযুক্ত পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজর আলী বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মারধর তো দূরের কথা, আমরা যদি কেউ ওই মহিলাকে তিল পরিমাণ আঘাত করে থাকি তবে সেটা আল্লাহ বিচার করবেন। আর না করে থাকলে আমাদের বিরুদ্ধে ওই অপপ্রচারের বিচারও আল্লাহ করবেন।

বিশ্বনাথের পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান’সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমের লিখিত অভিযোগ দায়েরের সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ

© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo