২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:৩৯

সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে আসাদ উদ্দিনের ‘বিশেষ বার্তা’!

সোনার সিলেট ডেক্স
  • আপডেট শনিবার, আগস্ট ২৮, ২০২১,

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগদলীয় সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে তুমুল আলোচনায় ছিলেন তৎকালীন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। তবে দল থেকে শেষপর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল ওই সময়কার মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে। এতে মনোক্ষুণ্ন না হয়ে কামরানের পক্ষে দিনরাত খেটে যান আসাদ। তাতে প্রশংসাও কুড়ান দলের সকল পর্যায়ে।

সিসিকের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাতামাতি করছেন, নিজের পছন্দের নেতার পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করছেন। কামরান প্রয়াত হওয়ায় আগামী নির্বাচনে নিশ্চিতভাবেই নতুন কেউ দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তাতে সবার আগে আসাদ উদ্দিন আহমদের নামই উচ্চারিত হচ্ছে। তার কর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষীরা এখন থেকেই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করছেন।

কিন্তু মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ এটা পছন্দ করছেন না। তিনি এতে ‘বিব্রতবোধ করছেন’ বলে এক ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন।

নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া একটি নাতিদীর্ঘ পোস্টে আসাদ উদ্দিন আহমদ মূলত আগামী সিসিক নির্বাচন নিয়ে ‘বিশেষ বার্তা’ দেওয়ারই চেষ্টা করেছেন। তার মতে, সিসিক নির্বাচন নিয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পোস্ট দিলে দলে বিভাজন সৃষ্টির আশংকা থাকে।

আসাদ উদ্দিন আহমদ যা লিখেছেন, তা হুবুহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো

“ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আগামী সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ক্লিন ইমেজ, যোগ্যপ্রার্থী ইত্যাদি নানা বিশেষন ব্যবহার করে লেখালেখি করছেন। আমার নামেও কেউ কেউ লিখছেন। এতে আমি নিজে বিব্রতবোধ করি।

আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আমাকে নিয়ে সিসিক নির্বাচনকেন্দ্রীক কোন পোস্ট না দিলেই আমি খুশি হবো। কারণ, এতে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির আশংকা থাকে। যা কখনোই কাম্য নয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরার মতো অনেক কিছু আছে। আপনারা যদি মনে করেন ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, আর দলের চেয়ে দেশ বড়’, তবে ব্যক্তিকেন্দ্রীক প্রচারণা বাদ দিয়ে সরকারের উন্নয়ন, অর্জন প্রচার করুন। সম্ভব হলে সরকারের টাকায় সিটি কর্পোরেশনের কাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরুণ। এতে সমাজ এবং দল অনেকবেশী উপকৃত হবে। সর্বোপরি উপকৃত হবো আমরা সকলেই।

ব্যক্তিগত জীবনে রাজনীতি থেকে আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। নতুন প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানেন না, আমার প্রায় বিয়াল্লিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক না হলেও এই পূণ্যভূমি সিলেটে যে সম্মান-ভালোবাসা পেয়েছি তাতেই আমি সন্তুষ্ট।

২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আমার সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন এবং ওআইসির ইসলামী সম্মেলনে যাওয়ার সুযোগ হয়। এবং ২০১৭ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাথে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় এডিবির ৫১তম বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও হয়েছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের।

এছাড়া, সফলতা-ব্যর্থতা মিলিয়ে প্রায় আট বছর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এরআগে দীর্ঘদিন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।

ছাত্রাবস্থায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। পঁচাত্তর পরবর্তী কঠিন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সরাসরি ভোটে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মদন মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি, জিএস, ছাত্রমিলনায়তন সম্পাদক এবং খেলাধুলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলাম। সিলেটের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে একাটানা চারবার নির্বাচিত হওয়ার নজির নেই। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় উনিশটি মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলাম।

তাই সবশেষে বলতে চাই, কোন ব্যক্তির নয়, সরকারের অর্জনগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরলে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমরা সকলেই সম্মানিত হবো।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo