সুইডেন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর গুমের সঙ্গে র্যাবকে জড়িয়ে যে কথা বলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ দাবি করেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ((কমান্ডার)) খন্দকার আল মঈন। এসময় তিনি জানান, ইলিয়াস আলী গুমের পর তার স্ত্রীকে সর্বোচ্চ আইনি সহযোগিতা করা হয়েছে।
র্যাবের সম্পৃক্ততার অভিযোগ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মিডিয়া সেন্টারে খন্দকার আল মঈনকে প্রশ্ন করা হয়।
তিনি বলেন, নেত্র নিউজের যে খবরটির কথা আপনারা বলেছেন, সেখানে যেভাবে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে, র্যাব মনে করে এটি সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, দেখুন, র্যাব একটি সুশৃঙ্খল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমাদের যত অভিযান, আমরা আইন মেনে পরিচালনা করি। এখানে যেসব তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরং আমরা বলব- ইলিয়াস আলীকে যখন থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না, ওনার স্ত্রী যখনই আমাদের কাছে এসেছেন, আমরা তাকে সর্বোচ্চ আইনি সহযোগিতা দিয়েছি।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী যখন-যেখানে তার স্বামী বেঁচে থাকতে পারেন বলে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন, তখনই র্যাব তাকে সহযোগিতা দিয়েছে। এখনো র্যাব তাকে সহযোগিতা করছে। কেউ কোনো তথ্য দিলে র্যাব এখনো সেখানে যাচ্ছে। কারণ এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। আমরাও চেষ্টা করেছি।
চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইলিয়াস আলীর গুমে র্যাব সম্পৃক্ত ছিল। এ ঘটনায় সুনির্দিষ্টভাবে তিন কর্মকর্তার নামও প্রকাশ করে নেত্র নিউজ।
ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক দশক উপলক্ষে গত সোমবার রাজধানীর গুলশানের এক হোটেলে ইলিয়াস আলীসহ গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও শিরোনামে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
ওই সভায় ইলিয়াস আলীর স্ত্রী লুনা বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকেরাই যে ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়ে গেছেন, এটা নিশ্চিত। আর ঘটনার পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সাক্ষাতের আয়োজন এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার আশ্বাস ছিল লোকদেখানো। ওই সময় বিএনপির পাঁচ দিন হরতাল ছিল। বিএনপির সে হরতাল ও আন্দোলন বন্ধ করার জন্যই ছিল ওই আশ্বাস।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বনানীর রাস্তা থেকে ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার আলীকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে যান। পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ।