দেশের ৯০ বছরের প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ প্রবর্তিত কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কারের জন্যে আশির দশকের শক্তিমান কবি ও কথাসাহিত্যিক সোলায়মান আহসানকে মনোনীত করা হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, মুসলিম সাহিত্য সংসদ ২০০১ সাল থেকে কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে আসছে। ২০০১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার কথাশিল্পী অধ্যাপক শাহেদ আলীকে প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল ইসলাম, ২০০৪ সালে গবেষক অধ্যাপক আসাদ্দার আলী, ২০০৬ সালে গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল, ২০০৮ সালে গবেষক ড. গোলাম কাদির, গবেষক দেওয়ান নূরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ২০১০ সালে শিক্ষাবিদ-গবেষক প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ, ২০১৩ সালে সাংবাদিক-বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী, ২০১৬ সালে কবি মুফাজ্জল করিম, ২০১৮ সালে কবি নৃপেন্দ্র লাল দাসকে এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০২৪ একত্রে পাঁচজনকে কেমুসাস সাহিত্যপুরস্কার প্রদান করা হয়। এ পাঁচজন হলেন রাগিব হোসেন চৌধুরী (দশম কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯), আবদুল হামিদ মানিক (একাদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২০), আমেনা আফতাব (দ্বাদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২২), মুকুল চৌধুরী (ত্রয়োদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২১), মীর লিয়াকত আলী (চতুর্দশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩) এবং শাকুর মজিদ (পঞ্চদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪)। কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্কার প্রদানের ধারাবাহিকতায় কবি সোলায়মান আহসানকে সার্বিক সাহিত্যকর্ম বিবেচনা করে কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। এবার কেমুসাস সাহিত্য সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আসছেন দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিমান কবি আবদুল হাই শিকদার। এবারের কেমুসাস সাহিত্য সম্মেলন শিকড় সন্ধানী লেখক ও গবেষক অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলীকে নিবেদন করা হচ্ছে। তাছাড়া “স্বতন্ত্র সমাজ বিনির্মাণে সিলেটী নাগরী” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সিলেটি নাগরী লিপি গবেষক মোস্তফা সেলিম।
এবারের সাহিত্য সম্মেলন দেশের সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য দেশের সকল পর্যায়ের কবি-সাহিত্যিকগণের জন্য অনলাইনে একটি নিবন্ধন ফরম খোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার এই প্রতিষ্ঠানের মুখপত্র আল ইসলাহে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয় এবং ১৯৪৭ সালেই বাংলা ভাষার পক্ষে ৩টি সভার আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভাটি উর্দুর সমর্থকরা পণ্ড করে দেয়। সাহিত্য সংসদ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ‘নজরুল সাহিত্য সম্মেলন’ আয়োজনসহ নজরুল চর্চায় অনন্য ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাহিত্য আসর আয়োজন, নিয়মিতভাবে সাহিত্য সাময়িকী আল ইসলাহ প্রকাশনা করছে। সাহিত্য সংসদের অর্ধ লক্ষাধিক প্রাচীন গ্রন্থ সমৃদ্ধ পাঠাগার এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আইটেম নিয়ে একটি জাদুঘর রয়েছে।