সিলেটে গত সপ্তাহে শনি ও রোববার কয়েক দফায় হওয়া ভূমিকম্পের ভয় এখনও কাটেনি নগরবাসীর। এই সিরিজ ভূমিকম্পের পর বিশেষজ্ঞদের দেয়া সিলেটে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা যেন স্থায়ী ভীতি ধরিয়ে দিয়েছে নগরবাসীর ভেতরে।
এই পরিস্থিতিতে বড় ভূমিকম্প হলে এর ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং বিপদ এড়াতে নগরীর ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে একটি তালিকা করেছে সিলেট সিটি করপোরেশেন। অতি শীঘ্রই এসব ভবন পরীক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ চারটি টিম। এই টিমের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভাঙার প্রস্তুতি নেবে সিসিক।
কিন্তু এত তোড়জোড় আর রেড সিগন্যালের পরও টনক নড়ছে না নগরীর কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের অসেচতন মালিকের।
সিসিকের তথ্যমতে, নগরীর ২৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় রয়েছে ৬ নং ওয়ার্ডের চৌকিদেখি সিলসিলা গলির সরকার ভবন নামক ৩ তলা বিল্ডিং। প্রায় ৩০ বছরের পুরনো বিল্ডিংটিতে চরম ঝুঁকি নিয়ে বাস করেন মালিকসহ দশটি পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ এই ভবনটি গড়ে উঠেছে একদম চা বাগানের পাশ ঘেষে। পুরনো হওয়াতে এই ভবনে নেই আপদকালীন সুযোগ-সুবিধা কিংবা জরুরিব্যবস্থা। উঠানামার সিঁড়ি এত সরু যে, কোনো দুর্ঘটনার সময় বাসিন্দারা দ্রুত এটি দিয়ে নামতে না পারার আশঙ্কাই বেশি।
অভিযোগ আছে- কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক নকশা অনুসরণ না করে গড়ে তোলা হয়েছে এই ভবন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সিসিকের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, অনেকবার তাগাদা দিলেও মালিকপক্ষ তাতে ভ্রুক্ষেপ করেননি। এমনকি সিসিক থেকে প্রকৌশলী টিম সেখানে পরিদর্শনে গেলেও তাদের সহযোগিতা করেননি বাড়ির মালিক বিমল চন্দ্র।
ফরহাদ শামীম আরও জানান, সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর এ ভবনের কোনো নকশা অনুমোদন হয়নি। এর আগে ইউনিয়ন থাকাকালীন সময়েও হয়নি। এই বিল্ডিং মালিকপক্ষ নিজেরাই নিজেদের প্ল্যান মোতাবেক তৈরি করেছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় ভবনটি এমনভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে যে- সিলেট বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে সেটি ধ্বংস্তুপে পরিণত হতে পারে।
তবে সেটি মানতে নারাজ ‘সরকার ভবন’র মালিক। তাঁর দাবি- শত্রুতা মেটাতে এলাকার একটি কুচক্রিমহল কাউন্সিলরকে বিভ্রান্ত করে তার বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে।
বিমল চন্দ্র সিলেটের একটি অনলাইন দৈনিক-কে বলেন, ‘সরকার ভবন’-এ কোনো ফাটল নেই। সকল কাগজপত্রও ঠিক আছে। যথাযথ বিল্ডিং কোড মেনে ভবনটি তৈরি করা হয়।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা দেখতে চাইলে তারা সব ধরনের কাগজপত্র দেখাবেন।
এসএসডিসি/ ইআ