২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বিকাল ৫:৫১

ঢাকা-সিলেট সড়ক উন্নয়নে ১৭৮ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

সোনার সিলেট ডেক্স
  • আপডেট শনিবার, আগস্ট ২৮, ২০২১,

ঢাকা-সিলেট করিডোরে আঞ্চলিক বাণিজ্যের গতিশীলতা ও সড়ক নিরাপত্তার উন্নয়নে মাল্টি ট্রান্স ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির (এমএমএফ) আওতায় ১৭৮ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি।

ম্যানিলাভিত্তিক এ ঋণদাতা সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়কের কাজ শেষ হলে তা বাণিজ্যের নতুন একটি পথের জন্য সহায়ক হয়ে উঠবে। এই সড়ক চট্টগ্রাম বন্দরকে তিনটি স্থল বন্দর আখাউড়া, শেওলা এবং তামাবিলের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে সেখান থেকে মিয়ানমার এবং ভুটানের সঙ্গেও যুক্ত করবে।

সরকারের ‘নর্থইস্ট বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর’ এর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠবে এই করিডোর। যার লক্ষ্য ওই অঞ্চলে জ্বালানি উৎপাদন এবং নির্মাণ সামগ্রীসহ প্রধান শিল্পগুলোর উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও সংহত করা। দক্ষিণ এশিয়ায় এডিবির পরিবহন বিশেষজ্ঞ সাতোমি সাকাগুচি বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং পরিবহনের কেন্দ্র হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এর অনন্য সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে।’

‘সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের আওতায় ৫ নম্বর রোড করিডোরের প্রধান অংশ এই সড়ক। এর উন্নয়ন পণ্য পরিবহনের খরচ কমিয়ে আনবে, প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং প্রতিবেশী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াবে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও নিরাপদ প্রবেশাধিকার দেবে। এই বিনিয়োগ প্রকল্প এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমন্বিত এবং টেকসই উন্নয়নে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।’ ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে’ বিনিয়োগের এই অর্থ চারটি ধাপে দেওয়া হবে। প্রথম দফায় ‘এমএমএফ’ থেকে দেওয়া ৪০ কোটি ডলার ‘জাতীয় মহাসড়ক নম্বর ২’ প্রশস্ত করাসহ ঢাকা-সিলেট করিডোর দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করার প্রধান চুক্তিগুলোর প্রাথমিক কাজগুলোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এর মধ্যে রয়েছে ৬০ কিলোমিটার ফুটপাথ, ২৬টি পদচারী সেতু, ১৩টি ওভারপাস। জলবায়ু এবং দুর্যোগের ঝুঁকিসহ বয়স্ক, নারী, শিশু এবং ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কথা বিবেচনা করে এসবের নকশা করা হবে।

২৬৯ কোটি ডলারের এই প্রকল্পে সরকার ৯১ কোটি ডলারের তহবিল দেবে। এমএফএফ ছাড়াও ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্স স্পেশাল ফান্ড’ থেকে কারিগরী সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ ডলার দেবে এডিবি। এছাড়া, দারিদ্র্য কমানোর জন্য জাপান সরকারের অর্থায়নে ‘জাপান ফান্ড’ থেকে অতিরিক্ত আরও ২০ লাখ ডলার দেওয়া হবে। এছাড়া সড়কের নিরপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর’ এর সক্ষমতা বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তন, লৈঙ্গিক সমতা এবং সামাজিক অন্তর্ভূক্তিকরণের জন্যও তহবিল দেবে ঋণদাতা সংস্থাটি।

‘সাসেক’ সদস্য দেশগুলোতে পরিবহন এবং বাণিজ্য সুবিধাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই অঞ্চলে ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি পরিবহন প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।

এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনের জন্য ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । শুক্রবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমপ্লেক্সে ড. মোমেন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা হাসপাতালে ফ্রি কনসেনট্রেটর বিতরণকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এডিবির কান্ট্রিডিরেক্টর শুক্রবার এ বরাদ্দের কথা জানিয়েছেন। এ সড়কটি ১৯৯২ সালে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৎকালীন সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, আমাদের এত গাড়ি নেই তাই বড় সড়কের দরকার নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা এই সড়কটির গুরুত্ব অনুধাবন করে চার লেন থেকে ছয় লেন করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহাসড়কের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পুরো সিলেট অঞ্চল এবং মহাসড়কের অন্যান্য স্থানগুলো পর্যটন এবং শিল্পাঞ্চলগুলো উপকৃত হবে, যা শেষ পর্যন্ত জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পিও শফিউল আলম জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিনিয়র সহ সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা: হিমাংশু লাল রায়, সিভিল সার্জন ডা: প্রেমানন্দ মন্ডল, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বোর্ড সদস্য আব্দুল জব্বার জলিল, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবু জাহিদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট আফসর আহমদ, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি, সাধারণ সম্পাদক মো: শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সাধারণ সম্পাদক মুসফিক জায়গীরদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আহমদ, জাতীয় মহিলা সংস্থা সিলেটের চেয়ারম্যান মিসেস হেলেন আহমদ, মোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম সাইস্তা, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: মাঈনুল আহসান, খাদিমপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো: জালাল উদ্দিন। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুসিক, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম ইমরানসহ উপজেলার অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo