বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ের মাধ্যমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৩০ ম্যাচ অপরাজিত থাকল মেসিরা।
ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে করা গোল তিনটি করেছেন লিওনেল মেসি, ডি মারিয়া ও নিকোলাস গঞ্জালেজ।
মাঝে দুই ম্যাচে জাতীয় দলে ছিলেন না মেসি। তবে ফিরেই পেয়েছেন গোলের দেখা।
অপরদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে দলের প্রধান স্ট্রাইকার লাওতারো মার্টিনেজকে ছাড়াই মাঠে নেমেছে আর্জেন্টিনা। এদিকে চার ম্যাচে নিষিদ্ধ হওয়ার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ও জিওভানি লো সেলসোরাও নেই এই ম্যাচে। ফলে শুরুর একাদশে বেশকিছু পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে লিওনেল স্কালোনি। কোচের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, সেটা ম্যাচের ফলেই প্রমাণ মিলে। অথচ ৪৩ বছর বয়সী কোচ স্কালোনির ওপর যখন মেসিদের দায়িত্ব দেয়া হলো, কে ভেবেছিল, তার অধীনে আর্জেন্টিনা এমন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে?
২৮ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে আর্জেন্টিনাকে একটা আন্তর্জাতিক শিরোপা এনে দিয়েছেন এই কোচই। শুধু সেটা করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন না, স্কালোনির অধীনে আর্জেন্টিনা সর্বশেষ ৩০ ম্যাচ ধরে অপরাজিত।
গতকাল জাতীয় দলের হয়ে বহুদিন পর নেইমার স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন, সেটা দেখেই কি না, আজীবন উইঙ্গার আর আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা মেসিকে আজ মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলালেন স্কালোনি। পেছনে তিন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার আর উইঙ্গারের ভূমিকায় ছিলেন লাৎসিওর হোয়াকিন কোরেয়া, ব্রাইটনের অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার ও ফিওরেন্তিনার নিকোলাস গঞ্জালেস। আনহেল ডি মারিয়া, হুলিয়ান রদ্রিগেজ কিংবা লুকাস ওকাম্পোসের মতো তারকারা ছিলেন বেঞ্চে।
শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলা শুরু করে আর্জেন্টিনা। মেসি যথারীতি ছিলেন সপ্রতিভ। হোয়াকিন কোরেয়া মিস না করলে প্রথমার্ধেই লাৎসিওর এই ফরোয়ার্ডকে দিয়ে কমপক্ষে দুটি গোল করাতে পারতেন মেসি। নিজেও গোলের খাতায় নাম লেখাতে পারতেন, তার শট ভেনেজুয়েলার ডিফেন্ডার নাহুয়েল ফারেরাসির হাতে লাগলেও আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দেননি রেফারি।
৩৫ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন নিকোলাস গঞ্জালেস। যদিও তার গোলে মেসির সরাসরি ভূমিকা ছিল না। মাঝমাঠে খেলা রদ্রিগো দি পলের সহায়তায় দলকে এগিয়ে দেন ফিওরেন্তিনার এই উইঙ্গার। ৩৯ মিনিটে ভেনেজুয়েলার স্ট্রাইকার জোসেফ মার্তিনেজ গোল করার সুযোগ পেলেও ব্যর্থ হন।
হোয়াকিন কোরেয়ার গোলের সুযোগ নষ্ট করা দেখেই কি না, ৬৪ মিনিটে তার জায়গায় আরেক কোরেয়াকে মাঠে নামান স্কালোনি – আতলেতিকোর আনহেল। ৭০ মিনিটে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের জায়গায় নামান হয় আরেক আনহেল – ডি মারিয়াকে। ডি মারিয়া নামার পর আরো ক্ষুরধার খেলা শুরু করে আর্জেন্টিনা। নেমেই নয় মিনিটের মাথায় রদ্রিগো দি পলের সহায়তায় গোলের খাতায় নাম লেখান পিএসজির এই উইঙ্গার। দি পলের কাছ থেকে বল নিয়ে ডান প্রান্তের বেশ অনেকটুকু দৌড়ে দুই ডিফেন্ডার আর এক গোলকিপারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত চিপে যেভাবে গোল করলেন, আর্জেন্টাইন ভক্তদের মনে থাকবে অনেক দিন।
তিন মিনিট পরেই বন্ধু মেসিকে দিয়ে ম্যাচের তৃতীয় গোলটা করান ডি মারিয়া। মাঝমাঠ থেকে বল জোগাড় করে মেসিই পাস পাঠান ডানদিকে থাকা ডি মারিয়ার দিকে। ডি মারিয়া বিপজ্জনকভাবে ডিবক্সে ঢুকে গিয়ে ক্রস পাঠান ততক্ষণে গোলকিপারের সামনে চলে যাওয়া মেসিকে। অসাধারণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডান পায়ের শটে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন মেসি। আর তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায়, আর্জেন্টিনার জয়যাত্রা।
এসএসডিসি/ ইবিএস/ ২৬-০৩-২২/ ১০:৫৮