আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। শুক্রবার একরামের এমন ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।
কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসন। ওই আসনের সাংসদ ওবায়দুল কাদের। তার গ্রামের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। আর সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুরে
এর আগে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় ওবায়দুল কাদের ওই আসনে বিএনপির তৎকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। আর একরামুল করিম চৌধুরী পেয়েছিলেন ৪০ হাজারের বেশি ভোট।
একরামুল করিম চৌধুরীর এ ঘোষণায় জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বছরখানেকের বেশি সময় ধরে চলে আসা অস্থিরতায় নতুন মাত্রা যোগ হলো। এবিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা সাংসদ একরামুল করিমের ঘোষণাকে ওবায়দুল কাদেরকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে ফেলার একটা কৌশল বলে মনে করছেন। পাশাপাশি এর মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে সদর আসনে (নোয়াখালী-৪) নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত রাখার একটি আগাম কৌশল হিসেবেও দেখছেন তারা।
তবে স্থানীয়দের মতে, দলে এমন বিভক্তির ফায়দা নিতে পারে তৃতীয় পক্ষ। গত দুই বছর ধরে নানা ঘটনায় আলোচিত নোয়াখালী জেলা। ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের ঘটনায় দূরত্ব বেড়েছে দুই সংসদ সদস্যের। এসব ঘটনার জেরে টানা ১৭ বছর ধরে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদও হারান একরাম চৌধুরী। এমন অবস্থায় নোয়াখালী-৪ ও ৫ দুই আসনেই মনোনয়ন চাইবার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার ইফতার অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অনেক বছর পর কবিরহাটের মানুষের ঘামের গন্ধ পাচ্ছি আমি বাতাসে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কী হবে, আমি জানি না। তবে আপনারা যদি চান নোয়াখালী-৪ ও নোয়াখালী-৫ দুই আসন থেকে আমি নমিনেশন চাইব। জননেত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন।’
এমন ঘোষণায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই একরামের পাশে থাকার ঘোষণা দিচ্ছেন। আবার অনেকে বলছেন, দলের মধ্যে এমন বিভেদ ভালো ফল আনবে না।
এবিষয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আনম সেলিম বলছেন, মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারেন, সিদ্ধান্ত নেবেন সভানেত্রী। তবে দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে সবাইকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।