ভুক্তভোগী শান্তনা খাতুন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের শামসুল হকের মেয়ে। বর্তমানে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
শান্তনা খাতুন জানান, ৪ বছর আগে পাশের কুলতলা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ফিরোজ উদ্দিন বাবুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দেড় বছর আগে মেয়ে মায়িশার জন্ম হয়। মায়িশা বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন পড়ে। ওই সময় আমার কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিতে পারলে আমাকে তালাক দেবে বলেও জানায় মায়িশার বাবা।
শান্তনা বলেন, ‘আমার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির ধারণা আমার গর্ভের কারণে মাশিয়া প্রতিবন্ধী হয়েছে। তাই মেয়েকে সুস্থ করতে যত টাকা লাগবে সব আমাকে দিতে হবে বলে জানান তারা। টাকা দিতে না পারায় দশ মাস আগে নির্যাতন করে প্রতিবন্ধী মেয়েসহ আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, চার মাস আগে আমাকে তালাক দেয়া হয়েছে।’
দিনমজুর ফিরোজ উদ্দিন বাবু বলেন, ‘আমি কাজে গেলে শান্তনার বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক করে। এ ছাড়া সে চরম অবাধ্য ছিল। আমার বাবা-মা আলাদা থাকলেও তাদের গালিগালাজ করত। তাই তাকে আইন সম্মতভাবে আদালতের মাধ্যমে তালাক দিয়েছি। সে আমার নামে আদালতে ৫ থেকে ৬টি মামলা করেছে। আমি তাকে ছেড়েছি, মেয়েকে নয়। আমার মেয়েকে নিতে রাজী আছি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত ফিরোজসহ তার পরিবারের জড়িত সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ডিপিওসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়কারী সাইদুর রহমান বলেন, সন্তান প্রতিবন্ধী বলে মাকে তালাক দেয়ার ঘটনার বিচার হওয়া উচিত। স্মারকলিপি দেয়ার পর ডিসি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি চরম অমানবিক। সন্তান প্রতিবন্ধী হলে তাকে অবহেলা করা অপরাধ। একটি শিশু প্রতিবন্ধী হওয়া না হওয়ার ব্যাপার সৃষ্টিকর্তার হাতে। সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে স্ত্রীকে তালাক দেয়াটা চরম অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।