স্টাফ রিপোর্টার উদ্বোধনের আগেই সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছাদে ফাটল দেখা দেয়। এনিয়ে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন সিটি করপোরেশন (সিসিক) মেয়র। নির্মাণে ত্রæটি রয়েছে কী-না তা অনুসন্ধানের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি। এ সময় কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এনিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন শীঘ্রই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিবে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, বিভিন্ন কারণে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসেনি। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
সিসিকের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এটি বাহিরের দিকে একটি ওয়াল, এর কারণে মূল ভিত্তিতে কোন সমস্যা হবে না। ডিজাইনের সমস্যা থাকার কারণে এটি হয়েছে। বাইরের যে পার্টিশন ওয়াল দেয়া হয়েছে সেটার উচ্চতা বেশি। এর নিচের কলামে ফাউন্ডেশন শক্তিশালী না হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে।
টার্মিনালের নকশা করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক সুব্রত দাস ফাটল প্রসঙ্গে বলেন, স্থাপনায় বেশ কয়েকটি অংশ থাকে। যার মধ্যে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও প্লাম্বিং- এই পাঁচটি অংশ থাকে। টার্মিনালের ফাটল সেটি মূল যে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন আছে তাতে নয়। এটি পার্টিশন দেয়ালের ত্রæটি। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দ্রæত ব্যবস্থা না নিলে এটি মূল ভিত্তিতে আঘাত আনতে পারে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও সিসিকের উদ্যোগে ৮ একর ভ‚মিতে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমে টার্মিনালটির কাজ শুরু হলেও পরে তা বেড়ে ৬৭ কোটি টাকাতে গিয়ে দাড়ায়। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কদমতলী বাস টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করা হয়। এতে বিমানবন্দরের আদলে বহিঃর্গমন এবং আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
যাত্রী উঠানামার জন্য পৃথক টার্মিনাল ভবন, সুপরিসর পার্কিং ব্যবস্থা, পরিবহন সেবাদানকারীদের জন্য যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত পৃথক ভবন, রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট, বিশ্রামাগার, নারী, পুরুষ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগার, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, স্মোকিং জোন, ছোট দোকান, অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিক বেড, প্রার্থনা কক্ষসহ সব ধরনের আধুনিক সেবা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এ স্থাপনায়। এছাড়া পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল হলরুম এবং যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।