করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সিলেটে টিকাদান চলছে। রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বুথে টিকা টিকা দেয়া শুরু হয়। সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেন। আর সিলেটে ভার্চুয়াল বক্তব্যের মাধ্যমে সিলেটে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ওসমানী মেডিকেলের বুথে প্রথমে টিকা নেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিটি কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন, ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ , ১জন সেবিকা ও ১জন চিকিৎসক প্রথম দফায় টিকা নেন।
জানা গেছে, সিসিক এলাকায় করোনার জন্য রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ২৭শ’ জনের। নির্দেশনা অনুযায়ী, ৭শ’ জনকে সিলেক্ট করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নেয়ার ম্যাসেজ দেয়া হয়। যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন-তারা কার্ড নিয়ে যে সেন্টারে যাবেন-ওই সেন্টারেই তাদেরকে টিকা দেয়া হবে।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনার টিকা গ্রহণের জন্য সিলেট বিভাগে সবমিলিয়ে ৩৬ হাজার ৫১২ জন লোক রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৮৯ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এছাড়া, সুনামগঞ্জে ৮ হাজার, হবিগঞ্জে ৬ হাজার ২২ ও মৌলভীবাজারে ৪ হাজার ৪০১ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সিলেট বিভাগে ভ্যাকসিন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে ৩০৫টি। এর মধ্যে সিলেটে (মহানগর ও জেলা) ১৬২, সুনামগঞ্জে ১২৮, হবিগঞ্জে ৮ এবং মৌলভীবাজারে ৭টি সেন্টার রয়েছে। বিভাগের জন্য গঠিত ৪৮টি মেডিকেল টিমের মধ্যে সিলেটে ১৭টি, সুনামগঞ্জে ১৬, হবিগঞ্জে ৮ ও মৌলভীবাজারে ৭টি টিম রয়েছে। বিভাগে সবমিলিয়ে টিকাদানকারীর সংখ্যা ৬৮০ জন। এর মধ্যে সিলেটে ৩২৪ জন, সুনামগঞ্জে ২৫৬ জন, হবিগঞ্জে ৪৮ জন এবং মৌলভীবাজারে ৫২ জন রয়েছেন। আর বিভাগে মোট ভলান্টিয়ার (স্বেচ্ছাসেবী) হচ্ছেন-১৩৬০ জন। সিলেটের ৬৪৮ জন ছাড়াও সুনামগঞ্জে ৫১২ জন, হবিগঞ্জে ৯৬ জন এবং মৌলভীবাজারে ১০৪ জন ভলান্টিয়ার রয়েছেন। সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৪০০ ভায়াল (চার লাখ ৪০ হাজার ডোজ) টিকা এসে পৌঁছেছে। এ বিভাগের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ১ কোটি ১২ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৪ জন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: জাহিদুর রহমান জানান, সিলেট নগরীতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে করোনার টিকা দেয়া হবে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি বুথে থাকবে ১২টি টিম। এখানে দৈনিক ১২শ’ জনকে ভ্যাকসিন দেবার সক্ষমতা আছে। এছাড়া, পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে একটি বুথে থাকবে একটি টিম। প্রতিটি টিমে সেচ্ছাসেবক, সেবিকা ও চিকিৎসক থাকছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট-এর সহকারী পরিচালক ডা: আনিসুর রহমান জানান, সিলেট বিভাগে এক মাসে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৮ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৭টি ভ্যাকসিনের চাহিদা ছাড়াও সুনামগঞ্জে ৯০ হাজার, হবিগঞ্জে ৩৫ হাজার ৪১ এবং মৌলভীবাজারে ২৮ হাজার চাহিদা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ চাহিদা আরও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।