পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছি, রমজানের রোজা রাখছি এবং অন্যান্য ভালো কাজও করছি কিন্তু সংসারে অশান্তি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না।
আমি মুখে বলি একটা আর করি অন্য। আমি অন্যকে যে নসিহত করি তা নিজেই পালন করি না। নিজ ঘরে সেই নসিহতের আমল নেই। আমার সবকিছুতে মিথ্যা ছেয়ে আছে।
হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা ছাড়া নামাজ আর চুরি ও আত্মসাতের সম্পদের সদকা কবুল হয় না।’ (সহিহ মুসলিম)
তাই যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে তার পুণ্যকর্ম আল্লাহর কাছে মূল্যহীন।
আসলে যারা মিথ্যা বলে আল্লাহতায়ালার তাদের ওপর ভরসা নেই। তারা মনে করে মিথ্যা বলে আমি অনেক কিছু অর্জন করে নিব কিন্তু তারা বুঝে না যে, এই মিথ্যাই তাকে ধ্বংস করে ছাড়বে, তার সন্তানদের ভবিষ্যত সে নষ্ট করছে। মিথ্যাবাদীদের মূলত ঈমান নেই।
যেভাবে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর নিদর্শনাবলীতে যারা ঈমান রাখে না কেবল তারাই মিথ্যা আরোপ করে থাকে।’ (সুরা নাহাল, আয়াত: ১০৫)
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম করা থেকে বিরত থেকো। কেননা এর কারণে (সাময়িক) পণ্য বেশি বিক্রি হলেও বরকত কমে যায়।’ (মুসলিম)
এখন আমরা কি দেখছি? ব্যবসায়-বাণিজ্য যে কাজই করছি সব কিছুতে মিথ্যাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, যার ফলে সংসারের শান্তি যেন বিনষ্ট হয়ে গেছে।
একই সঙ্গে আমার ইবাদত-বন্দেগি আল্লাহর দরবারে কোন কাজে আসছে না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমার সকল কাজে মিথ্যার ছড়াছড়ি। যদিও আমরা জানি মিথ্যা বলার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ, তারপরও মিথ্যাই যেন আমার সঙ্গী।
এখন বলুন, আমি নামাজ-রোজা যাই করিনা কেন মিথ্যা যদি পরিত্যাগ না করি তাহলে আমার এ আমলে কোন লাভ নেই। তাই যেভাবেই হোক মিথ্যা পরিত্যাগ করতেই হবে। মিথ্যা পরিত্যাগ ছাড়া আমার ইবাদত আল্লাহর কাছে কোনই মূল্য নেই।
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলার কারণে কারণে প্রতিনিয়ত কতই না সুখের সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে।
এছাড়া আমাদের মিথ্যা বলার কারণে সন্তানদের ওপরও এর মন্দ প্রভাব বিস্তার করে। যারফলে সন্তানরাও মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত হয়ে যায় আর ধীরে ধীরে তারা পরিবারের বদনামের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই আসুন, নিজেদের পুণ্যকর্মগুলোকে আল্লাহর দরবারে গৃহীত করার জন্য মিথ্যা পরিত্যাগ করি আর পাপকর্মের জন্য তার কাছে ক্ষমা চাই।
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে তার ক্ষমার চাদরে আবৃত করে নিন, আমিন।
লেখক, কলামিষ্ট আবুল কালাম আজাদ
এসএসডিসি/বিএম