২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৪:২০

বোকো হারামের শীর্ষ নেতার ‘আত্মহত্যা’

সোনার সিলেট ডেক্স
  • আপডেট সোমবার, জুন ৭, ২০২১,

নাইজেরিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের শীর্ষ নেতা আবুবকর শেকৈ মারা গেছেন বলে দাবি করছে অপর একটি প্রতিদ্বন্দ্বী জঙ্গিগোষ্ঠী। শেকৈ যুদ্ধ ধরা পড়ে নিজের শরীরের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপটি

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে পাঠানো এক অডিও রেকর্ডে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) দাবি করেছে, বোকো হারামের সঙ্গে তাদের এক যুদ্ধ চলাকালে আবুবকর শেকৈ তার নিজের শরীরের বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। এতে তার মৃত্যু হয়েছে।

যদিও এর আগে গত মাসে বোকো হারামের এই শীর্ষ নেতার মৃত্যুর খবর রটেছিল। তবে আবুবকর শেকৈয়ের মৃত্যুর খবর অবশ্য জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম বা নাইজেরিয়ার সরকারের তরফ থেকে এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে গত মাসে যুদ্ধেই এ জঙ্গিনেতার মৃত্যু হয়েছে। আইএসডব্লিউএপি এবার ওই খবর নিশ্চিত করতেই অডিও রেকর্ডটি প্রচার করছে।

এ ব্যাপারে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলছেন, শেকৈয়ের মৃত্যু হয়েছে কি না—তা জানার চেষ্টা করছেন তারা।

বার্তাসংস্থার এএফপি ওই অডিও রেকর্ডের ভাষান্তর করে জানায়, এতে বলা হয়েছে, আবুবকর শেকৈ যুদ্ধে ধরা পড়ার পর তাৎক্ষনিক বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে হত্যা করেছেন।

ওই অডিও রেকর্ডের কণ্ঠ আইএসডব্লিউএপি-এর শীর্ষ নেতা আবু মুসাব আল বার্নাবির বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আবু মুসাব আল বার্নাবির সঙ্গে পরিচিত এমন অন্তত দুইজন ব্যক্তি তাদের নিশ্চিত করেছেন যে, অডিওতে ইএসডব্লিউএপি’র শীর্ষ ওই নেতার কণ্ঠই শোনা গেছে।

অডিও রেকর্ডে আল বার্নাবি জানান, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা আবুবকর শেকৈইকে খুঁজে বের করে, এবং সে পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বোকো হারামের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তারা।

অডিও রেকর্ডে বলা হয়, ‘আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধারা শেকৈইকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে এবং তাকে অনুতপ্ত হওয়ার সুযোগ দিয়ে বলা হয়— সে যেনো আমাদের দলে যোগ দেয়’।

‘কিন্তু শেকৈ পৃথিবীতে অপমানিত হওয়ার চেয়ে পরকালে অপমানিত হওয়ার পথ বেছে নেয় এবং বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাৎক্ষনিক নিজেকে হত্যা করে’—বলা হয় ওই অডিওতে।

উল্লেখ্য, আইএসডব্লিউএপি একসময় বোকো হারামেরই অংশ ছিল। ধর্মীয় বিষয়ে কিছু মতভিন্নতা ও বেসামরিক লোকদের হত্যা করা হবে কি না এই প্রশ্নে বোকো হারাম থেকে ৫ বছর আগে আলাদা হয়ে যায় তারা। মূলত আবুবকর শেকৈয়ের নেতৃত্ব অস্বীকার করে আলাদা হয়েছিল আইএসডব্লিউএপি। তাই তারা বোকো হারামকে বিদ্রোহী বলে উল্লেখ করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, আবুবকর শেকৈয়ের মৃত্যু হলে আবারও দুই জঙ্গিগোষ্ঠী এক হয়ে যেতে পারে।

২০০৯ সাল থেকে শেকৈ বোকো হারামকে আন্ডারগ্রাউন্ড ইসলামিক গ্রুপ থেকে একটি পূর্ণ বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠীতে রূপান্তর করেন। উত্তর নাইজেরিয়ায় তার নেতৃত্বে বোকো হারাম হত্যা, অপহরণ ও লুটপাটের মাত্রা চরম পর্যায়ে বাড়িয়ে তুলে।

জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম এ পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে। এছাড়া ২০ লাখ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। এ জঙ্গিগোষ্ঠী নাইজেরিয়ার যে অঞ্চলে তাদের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকট বিরাজ করছে।

এসএসডিসি/বিএম

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2016 Paprhi it & Media Corporation
Developed By Paprhihost.com
ThemesBazar-Jowfhowo